 
                  সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদের বাবা আব্দুল মালেক, যিনি টিউশনের টাকায় সন্তানের পড়াশোনা চালাতেন, এখন দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার বিদ্যোৎসাহী সদস্য। তার মনোনয়ন ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন।
২৮ এপ্রিল ২০২৫; স্থানীয় প্রতিনিধি:
অর্থকষ্টে দিন পার করা এক প্রাক্তন ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক, যিনি নিজের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচও চালাতে হিমশিম খেয়েছেন, তিনিই এখন দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার গভর্ণিং বডির “বিদ্যোৎসাহী” সদস্য। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক প্রশ্ন ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
আব্দুল মালেক, যিনি হাতিয়ার এক ইবতেদায়ী মাদ্রাসায় সহকারী শিক্ষক ছিলেন, মাসিক আট থেকে দশ হাজার টাকার সীমিত আয়ে দিনাতিপাত করতেন। সম্প্রতি তিনি অবসর গ্রহণ করেছেন। তাঁর ছেলে, সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদের নিজের সাক্ষাৎকার অনুযায়ী, ঘুষের টাকা না থাকায় মালেক সাহেব এখনো পেনশনের টাকাও পাননি।
সাক্ষাৎকারে মাসুদ জানান, বর্ষাকালে তাদের ঘরে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ত। আর্থিক অনটনের কারণে মালেক সাহেব নিজে কখনো সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে পারেননি; বাধ্য হয়ে মাসুদ টিউশনি করে নিজের পড়ালেখা চালিয়েছেন।
কিন্তু সেই আব্দুল মালেককেই সম্প্রতি দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার গভর্ণিং বডির “বিদ্যোৎসাহী সদস্য” হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি মাদ্রাসার উন্নয়ন, অবকাঠামো সংস্কার, গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা এবং লেখাপড়ার মানোন্নয়নে “অবিরাম অবদান” রেখে আসছেন।
“বিদ্যোৎসাহী” সদস্য কে?
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্ণিং বডিতে ‘বিদ্যোৎসাহী সদস্য’ মনোনীত করা হয় সাধারণত তাদের, যারা প্রতিষ্ঠানটির আর্থিক বা অবকাঠামোগত উন্নয়নে বড় অংকের অনুদান প্রদান করেন বা বিশেষ অবদান রাখেন। ফলে মালেক সাহেবের নিদারুণ আর্থিক দুরবস্থা ও বাস্তবতার প্রেক্ষিতে তার এই মনোনয়ন নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া:
স্থানীয় একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “মালেক সাহেবের অবস্থা পুরো হাতিয়ার মানুষ জানে। উনি যদি মাদ্রাসার উন্নয়নে অবদান রেখে থাকেন, সেটা কিভাবে সম্ভব হলো, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। এটা একটা সাজানো বন্দোবস্ত।”
আরেকজন অভিভাবক মন্তব্য করেন, “এখন তো দেখি যারা তোষামোদ পারে বা প্রভাবশালী ছেলের বাবা, তারাই উন্নয়নকর্তা হয়!”
সমালোচকদের বক্তব্য:
বিশ্লেষকরা বলছেন, গত সাড়ে আট মাসে দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হওয়া সমন্বয়কদের পরিবার নিয়ে বারবার বিতর্ক উঠছে। কেউ হয়ে উঠছেন জমিদারের সন্তান, কেউ ঠিকাদার ব্যবসায়ী, কেউ দানবীরের প্রতিমূর্তি।
“বাংলাদেশ যাদের খুঁজছিল, তারা এখন জায়গা করে নিচ্ছে— এই মন্তব্য এখন সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহলে ঘুরছে,” জানান স্থানীয় এক সমাজকর্মী।
জনমানুষের প্রশ্ন:
নিজের সন্তানের লেখাপড়া চালাতে যিনি টিউশনি নির্ভর ছিলেন, সেই ব্যক্তি কিভাবে “মাদ্রাসা উন্নয়ন” এর নায়ক হয়ে উঠলেন— এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে হাতিয়ার মানুষ।

 
                         
         
         
         
        
সঠিক এবং সত্য স্ংবাদ প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই দু: সময়ে এই সাহসী পদক্ষেপের জন্য আমি একজন প্রবাসী হয়ে ও প্রতিটি লাইন অনেক মনোযোগ সহকারে পড়েছি।
হান্নান মাসুদের বাবার আঙ্গুল ফূলে কলাগাছ হবার গল্প জাতি মেনে নিতে পারছে না। একজন
মুক্তিযুদ্ধা একা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন। এটা অত্যন্ত প্রসংসনীয় কিন্তু আমাদের দেশের ১.৮০.০০০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার চূপ কেন।?
আবার ও ধন্যবাদ সম্পাদককে বস্তনিষ্ট সংবাদ প্রকাশ করার জন্য।
ধন্যবাদ এবং শুভকামনা নিরন্তর।
ধন্যবাদ, আপনার মতামতের জন্য। আমাদের সাথে থাকার জন্য আবারো ধন্যবাদ।