পাকিস্তান হাইকমিশনার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নারী কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে কক্সবাজার সফর ঘিরে বিতর্ক ও কূটনৈতিক প্রশ্ন। বিস্তারিত বিশ্লেষণে জানুন ঘটনার পেছনের গোপন তথ্য।

সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহম্মেদ মারুফ, এক রহস্যজনক সফরের কারণে গণমাধ্যম ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসেন। ৯ মে ২০২৫ তারিখে তিনি কক্সবাজারের উখিয়ার পাঁচ তারকা হোটেল সি-পার্লে অবস্থান করেন। সফরের উদ্দেশ্য ছিল ‘ব্যক্তিগত’ বলে দাবি করা হলেও তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দুইজন—একজন নারী ও তার বন্ধু পরিচিত ব্যক্তি আজহার মাহমুদ।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, হাইকমিশনারের সঙ্গে যাওয়া ওই নারী একজন বাংলাদেশি নাগরিক যিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে কর্মরত। নাম প্রকাশ না করা হলেও একাধিক সূত্রে তার পরিচয় উঠে আসে—হাফিজা হক শাহ নামে। ঢাকার ঝিগাতলায় বসবাসকারী এই নারীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক সময় পাকিস্তান হাইকমিশনারের সঙ্গে বিভিন্ন ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ছিল। যদিও সেগুলো এখন মুছে ফেলা হয়েছে, তার প্রোফাইলে হাইকমিশনার ও আজহারের নিয়মিত যাতায়াতের বিষয়টিও উঠে এসেছে।
হাইকমিশনারদের ব্যক্তিগত সফর অবশ্যই একটি স্বাভাবিক বিষয়, তবে প্রশ্ন উঠেছে যখন সফরটি ঘিরে এত গোপনীয়তা, ব্যক্তিগত সম্পর্ক, ও রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা যুক্ত থাকে। একজন কূটনীতিকের ব্যক্তিগত সম্পর্ক কিংবা সফর যদি দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তিতে প্রভাব ফেলে, তবে তা আর নিছক ব্যক্তিগত থাকে না।
হাফিজা হক শাহ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা হওয়ায়, প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে প্রশ্ন উঠছে, এমন একটি উচ্চপদস্থ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কিভাবে এমন ঘনিষ্ঠতায় জড়িত হয়ে আলোচনায় আসেন? এটি কি নৈতিকতার ব্যত্যয়, নাকি কেবলই ব্যক্তিগত সম্পর্ক?পূর্বে প্রকাশিত ফেসবুক পোস্ট থেকে ছবি মুছে ফেলা এবং সফরের বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা মূলত ঘটনাটিকে আরও বেশি রহস্যময় করে তুলেছে। এতে জনমনে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে। এটি শুধু ব্যক্তি নয়, বরং দুটি দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক পরিবেশকেও পরোক্ষভাবে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। যেখানে দুই দেশের সম্পর্ক এখনো ভঙ্গুর, সেখানে একটি বিতর্কিত ব্যক্তিগত সম্পর্ক কূটনীতির ছায়ায় ঢাকা পড়া মোটেও কাঙ্ক্ষিত নয়। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে সরকারি কর্মকর্তা ও বিদেশি কূটনীতিকদের আচরণে আরও স্বচ্ছতা ও শিষ্টাচার বজায় রাখার আহ্বান জানানো যেতে পারে।

 
                         
         
         
        