 
                  চট্টগ্রামে জব্দ হওয়া ৫১০০০ সেট মিলিটারি পোশাক KNF-এর নয়, আরাকান আর্মির জন্য তৈরি হচ্ছিল। এই ঘটনার নেপথ্যে আন্তর্জাতিক এনজিও, পাহাড়ি চরমপন্থা ও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিশ্লেষণ।
চট্টগ্রামে দুই দফা গোয়েন্দা অভিযানে মোট ৫১০০০ সেট মিলিটারি ক্যামোফ্লাজ পোশাক উদ্ধার—এটি নিছক কোনো জামা-কাপড়ের মামলা নয়। এটি একটি সুপরিকল্পিত আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের প্রমাণ, যার শিকড় আরাকান থেকে পাহাড়ের ভেতরে এবং রাজধানীর করপোরেট লাউঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত।
জব্দ হওয়া পোশাকের সংখ্যা, ডিজাইন ও উৎপাদন প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখলে যে সত্যটি চোখে পড়ে, তা KNF নয়—এই পোশাকের প্রকৃত গন্তব্য ছিল আরাকান আর্মি। এ সেই আরাকান আর্মি, যাদের হাতে রোহিঙ্গারা গণহত্যার শিকার হয়েছিল, এবং যাদের ভয়াবহতার কারণে আজ বাংলাদেশকে আশ্রয় দিতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে।
প্রথম দফায় ১৮ অথবা ২৫ মে জব্দ করা হয় ২০,৩০০ সেট ক্যামোফ্লাজ পোশাক। গার্মেন্টস মালিক সাহেদের ভাষ্য অনুযায়ী, অর্ডার ছিল ৪০,০০০ সেটের। পরে ২৬ মে বা তার আশপাশে আরেকটি গার্মেন্টস থেকে উদ্ধার হয় ১১,০০০ সেট। সব মিলিয়ে ৫১,০০০ সেট।
এই অঙ্কের বিপরীতে KNF-এর সদস্য সংখ্যা প্রায় ২,০০০। তাহলে ২৫ গুণ বেশি পোশাক কেন তৈরি হচ্ছিল? স্পষ্টতই, এটি KNF-এর জন্য নয়। বরং, পোশাকের ডিজাইন আরাকান আর্মির ইউনিফর্মের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়, KNF-এর সঙ্গে নয়।
বাংলাদেশে ২ বোতল ফেনসিডিল বা ১০ পিস ইয়াবা উদ্ধার হলেও পুলিশ প্রেস ব্রিফিং করতে ভুল করে না। অথচ ৫১,০০০ সেট মিলিটারি ইউনিফর্ম জব্দের ঘটনা প্রায় গোপন রাখা হয়।
সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলেও সিএমপি কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করতে চাননি। গোপনীয়তার এই প্রবণতা কিসের ইঙ্গিত দেয়?

KNF-এর নামে মামলা, যাতে প্রকৃত অপরাধীরা ধামাচাপা পড়ে
বায়েজিদ বোস্তামি থানায় দায়ের হওয়া মামলায় KNF-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ তথ্য-উপাত্ত KNF নয়, আরাকান আর্মিকেই সামনে আনে। আদালতে KNF-এর বিরুদ্ধে এই মামলা টিকে যাবে না বলেই আইনজ্ঞরা ধারণা করছেন।
তাহলে কেন KNF-এর নাম?কারণ, প্রকৃত অপরাধীকে আড়াল করতেই KNF-এর ছায়া ব্যবহার করা হচ্ছে। আরাকান আর্মি, পাহাড়ি সংগঠন এবং বিদেশি এনজিও—একটি সমন্বিত নেটওয়ার্ক?
এই ‘বায়ার’ ঠিক কে? গার্মেন্টস মালিক জানিয়েছেন, কাপড়, সুতা, বোতামসহ সমস্ত কিছু বায়ার সরবরাহ করেছে। সাধারণত একটি দেশের গৃহযুদ্ধ বা সশস্ত্র সংঘর্ষে ব্যবহৃত পোশাক তৈরি হয় গোপন মদদে—যার পেছনে থাকে আন্তর্জাতিক শক্তি ও অর্থায়নকারী এনজিও।
পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বতন্ত্র শাসনব্যবস্থার দাবি জিইয়ে রাখা হয়েছে। এই দাবির চূড়ান্ত রূপ দিতেই জন্ম নিয়েছে KNF, UPDF ও অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠন।
এই চরমপন্থী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আরাকান আর্মির সুসম্পর্ক বহু পুরনো।
অন্যদিকে, পার্বত্য অঞ্চলে কর্মরত কিছু বিদেশি এনজিও উন্নয়ন সহযোগিতার আড়ালে আসলে পৃথকীকরণ, সশস্ত্র প্রস্তুতি ও সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করছে—এমন অভিযোগ একাধিকবার ওঠেছে।
চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক এনজিওদের কার্যক্রম ও অর্থনীতির উপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিয়ন্ত্রণ সর্বজনবিদিত। তার অনুমতি ছাড়া এত বড় মাপের ‘অপারেশন’ চট্টগ্রামে সম্ভব?
এখানেই উঠছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি—এই অপারেশনের পেছনে কি ড. ইউনূস পরোক্ষভাবে জড়িত? এই সন্দেহ উড়িয়ে দেওয়া কঠিন।
কারণ, এই উদ্ধার অভিযান প্রকাশ পেলে ড. ইউনূসের ‘মানবিক মুখোশ’ ছিঁড়ে যেতে পারত। তাই বিষয়টি চাপা দিয়ে KNF-এর নামে কাহিনি বানানো হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সরকার এর আগেও পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদ ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
৫ আগস্ট ২০২৩-এ শেখ হাসিনা যে অবস্থান নিয়েছিলেন, তার ফলেই অনেক পরিকল্পনা থেমে যায়।এখন আবারো সেই ষড়যন্ত্র মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে—নতুন নামে, নতুন কৌশলে।
চট্টগ্রামে ৫১,০০০ সেট মিলিটারি পোশাক জব্দের ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
এটি একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী কাঠামোর অংশ, যার সঙ্গে জড়িত বিদেশি এনজিও, আরাকান আর্মি, পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন এবং রাষ্ট্রবিরোধী অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক।
এই সময় সরকারের উচিত হবে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা এবং প্রকৃত অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করা—না হলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব আরও বড় হুমকির মুখে পড়বে।

 
                         
         
         
         
         
         
        
Photos of recovered uniforms missing in this article. Need more info like this. Keep up the good work 👍