বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান আসাদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সহিংসতা ও মব হত্যাকাণ্ডের ভেতর ‘জাকার্তা মেথড’-এর আশঙ্কাজনক ছায়া। জানুন কীভাবে রাষ্ট্রীয়-অরাষ্ট্রীয় অপারেটররা কাজ করছে জনগণের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতা, মব-ভিত্তিক হামলা, এবং নিরাপত্তাহীন পরিবেশকে কেন্দ্র করে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজবিশ্লেষক আজিজুর রহমান আসাদ তার সোশ্যাল মিডিয়ার মন্তব্য ও দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে ‘জাকার্তা মেথড’-এর সম্ভাব্য বাস্তবায়ন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ইন্দোনেশিয়ায় ষাটের দশকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ছত্রছায়ায় কিভাবে এক মিলিয়নের বেশি প্রগতিশীল মানুষকে ইসলামী মিলিশিয়া ও মব দিয়ে হত্যা করা হয়। সেই একই কৌশল আজ বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধীদের উপর প্রয়োগের শঙ্কা বাড়ছে।
কী বলছে আসাদের পর্যবেক্ষণ?
- একজন সেক্যুলার নারীকর্মীর ছবি ও ঠিকানা প্রকাশ করে পুরস্কার ঘোষণা, এক ‘ফাইনাল সল্যুশনের’ ইঙ্গিত দেয়।
- মব হামলা নয় শুধু, এর পেছনে থাকে জিহাদি সংগঠন ও ক্যাডার বাহিনীর সমন্বিত পরিকল্পনা।
- বাংলাদেশের ভেতরে ১৩৩টি জঙ্গি সংগঠন ও ২৪০+ কিশোর গ্যাং এখন প্রশাসনের সহনশীলতার সুযোগে অপারেট করছে।
- এই গ্যাং ও জঙ্গি বাহিনীর অস্ত্র ও চাঁদাবাজি কার্যক্রম ধীরে ধীরে একটি কুটির শিল্পে রূপ নিচ্ছে, যা শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর ঘোষণায় থামানো সম্ভব নয়।
কৌশলগত প্রোপাগান্ডা: “We attack, then cry victim”
আজিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে বিরোধী পক্ষ একটি চরম বিপজ্জনক প্রচারণা কৌশল নিচ্ছে:
- নিজেরা হামলা চালিয়ে, ফ্যাসিস্ট আচরণ করেও পরে “ভিক্টিম” হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।
- প্রশাসনকে চাপ দিয়ে তথাকথিত তদন্তে দায়মুক্তি নিচ্ছে।
- এর মাধ্যমে প্রকৃত ভিক্টিমের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।
এই Entire Framework হচ্ছে ‘Jakarta Method’-এর “Victim Reversal Doctrine”-এর বাস্তবায়ন।
অর্থনীতি ও সহিংসতা: ‘মব টেরর’ এখন আয়বর্ধক প্রকল্প
আজিজুর রহমান এটিও স্পষ্ট করে বলেন যে, এই ধরণের সহিংসতা এখন শুধুই রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক মুনাফা অর্জনের একটি পন্থা।
তিনি গাজীপুরের ‘অন্তর’ নামে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট এক তরুণের ঘটনায় দেখিয়েছেন, কিভাবে মুক্তিপণ আদায়ের পরও হত্যাকাণ্ড ঘটে যাচ্ছে।
কী করণীয়?
আজিজুর রহমান দুইটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন:
- আত্মরক্ষার প্রস্তুতি নিন:
ভয়ের মনস্তত্ত্ব থেকে বের হয়ে, পরিবার-সম্পত্তি রক্ষা এবং নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। - স্থানীয় প্রতিরোধ গড়ুন:
ঢাকার দিকে না তাকিয়ে, নিজ এলাকার শ্রমজীবী ও সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে গণ-প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এনসিপি বা প্রশাসনের অপেক্ষা না করে, নিজেরাই সংগঠিত হোন।
বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সাম্প্রতিক সহিংসতা ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভেতরে লুকিয়ে থাকা ‘নিও-লিবারেল অপারেটর’ এবং ‘মিডিয়া-মোবিলাইজড জিহাদী প্রপাগান্ডা’ যদি থামানো না যায়, তাহলে দেশ এক ভয়াবহ অনিশ্চয়তার দিকে এগিয়ে যাবে। আজিজুর রহমান আসাদের এই সতর্কতা নিছক সতর্কবার্তা নয়—এটি একটি সংকটকালীন ডাক।
