মিয়ানমার করিডোর বাস্তবায়নের নামে বাংলাদেশে সামরিক বিভাজন ও বিদেশি হস্তক্ষেপের গভীর ষড়যন্ত্রে জড়িত মার্কিন নাগরিক খলিল।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে সবসময়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণেই বারবার এ দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বিদেশি ষড়যন্ত্র দেখা দিয়েছে। কিন্তু এবার ষড়যন্ত্র আরও গভীর, সুপরিকল্পিত এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে প্রবেশ করার মত ভয়ংকর মাত্রার।
সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত চরিত্র হলেন একজন তথাকথিত ‘নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিল’, যিনি মূলত মার্কিন নাগরিক। তিনি শুধুমাত্র একটি পরামর্শক নন—তিনি এক জিও-সফটওয়্যার মোড়কে ঢাকা অপারেশনাল এজেন্ট, যিনি বাংলাদেশের নিরাপত্তা কাঠামোতে বিদেশি প্রভাব প্রতিষ্ঠার মূল কুশীলব হয়ে উঠছেন।
মিয়ানমার করিডোর: উন্নয়ন না ‘ডেস্টাবিলাইজেশন প্রজেক্ট’?
খলিল সম্প্রতি মিয়ানমার করিডোর বাস্তবায়নের নামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেতরে বিভাজন সৃষ্টির চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এই করিডোর প্রকল্পকে সামনে রেখে সেনাবাহিনীর কমান্ড স্তরে সন্দেহ ও অবিশ্বাসের বীজ বপনের অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে।
এর মাধ্যমে একটি ‘প্যারালাল পাওয়ার স্ট্রাকচার’ তৈরি করে সেনাবাহিনীর বর্তমান নেতৃত্বকে পাশ কাটিয়ে বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই খলিলের মূল লক্ষ্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কাতারে গোপন বৈঠক: কার সঙ্গে, কেন?
বিশ্বস্ত সূত্র অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে খলিল কাতারে অবস্থানকালে একাধিকবার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার (সম্ভবত CIA ও DoD সংশ্লিষ্ট) প্রতিনিধিদের সঙ্গে গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।
এই বৈঠকগুলোতে:
- বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে চীনবিরোধী করিডোর স্থাপন,
- সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশ্বাসহীনতা সৃষ্টি,
- এবং বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া নিরাপত্তা নীতির পরীক্ষাগারে পরিণত করা—এই তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার জন্য হুমকি
এই ষড়যন্ত্র শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক ভারসাম্যের জন্য এক ভয়ংকর সংকেত। চীন, ভারত ও রাশিয়ার কৌশলগত স্বার্থের কেন্দ্রে থাকা বাংলাদেশ যদি এই করিডোরে যুক্ত হয়, তাহলে তা:
- ভারতীয় নিরাপত্তার ওপর চাপ বাড়াবে,
- চীনের বিআরআই প্রকল্পে ব্যাঘাত ঘটাবে, এবং
- আঞ্চলিক মেরুকরণ ত্বরান্বিত করবে।
খলিলের ‘নিরাপত্তা’ নাকি নিরাপত্তাহীনতা?
খলিলের পরিচয় গোপন রাখার চেষ্টা করা হলেও, ইতোমধ্যে একাধিক সূত্রে তাঁর মার্কিন নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা এবং বাংলাদেশে ‘দ্বৈত চর’ হিসেবে কাজ করার অভিযোগ উঠে এসেছে।
তিনি নিজের কর্মকাণ্ডকে ‘উন্নয়ন ও সহায়তা’ হিসেবে প্রজেক্ট করলেও, বাস্তবে তা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ধ্বংসের একটি পরিকল্পিত প্রক্রিয়া।
জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আপস চলে না। আজ যখন একটি তথাকথিত ‘উপদেষ্টা’ বিদেশি সংস্থার হয়ে দেশের সেনাবাহিনীতে বিভাজন, করিডোরের নামে ভূখণ্ড ব্যবহারের ষড়যন্ত্র এবং কৌশলগত স্বার্থে হস্তক্ষেপের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে, তখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রযন্ত্র, সিভিল সোসাইটি ও গণমাধ্যমের জরুরি সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সময়ের দাবি।
