 
                  ড. ইউনুস, বরখাস্ত জিয়া-হাসিনুর ও এনসিপির নেতৃত্বে বাংলাদেশকে ধর্মভিত্তিক জঙ্গি রাষ্ট্রে রূপান্তরের গভীর ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হচ্ছে। পড়ুন জুলাই ঘোষণাপত্রের ভয়ানক রূপরেখা ও এর পেছনের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক।
২০২৫ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশ যে রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে প্রবেশ করেছে, তার শিকড় অনেক গভীরে ও অনেক পূর্ব থেকেই গাঁথা। এখন দিন যতই যাচ্ছে, ততই পর্দা উঠে যাচ্ছে একটি বিস্তৃত, সংগঠিত এবং বহির্বিশ্ব-সমর্থিত জঙ্গি রাষ্ট্রায়নের পরিকল্পনার। যার পেছনে নেতৃত্ব দিচ্ছে তিন ব্যক্তি এবং একটি রাজনৈতিক দল—ড. মুহাম্মদ ইউনুস, মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (বরখাস্ত) হাসিনুর রহমান এবং ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি)।
জুলাই ঘোষণাপত্র—একটি প্রশাসনিক ছদ্মবেশে বিপ্লবী জেহাদি রূপরেখা
প্রকাশ্যে এটি একটি তথাকথিত ‘সংস্কার’ নথি হলেও, বিশ্লেষণে স্পষ্ট হয়—এই তথাকথিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের রোডম্যাপ, যার গন্তব্য বাংলাদেশকে একটি ইসলামিস্ট ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে রূপান্তর।
ঘোষণাপত্রের ১৭ নম্বর পাতায় রয়েছে এমন এক ঘোলাটে বাক্য—“রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় চেতনার সাথে সংগতি রেখে পুনর্গঠন করা হবে।” এই জাতীয় চেতনার অর্থ যে আসলে উগ্র ইসলামিক মতবাদ, তা নথির নানান স্থানেই সুস্পষ্ট।
জিয়া ও হাসিনুর— সেনাবাহিনী থেকে জঙ্গিবাদে রূপান্তরের দুই মুখ
জিয়াউল হকের জঙ্গি সম্পৃক্ততা কোনো নতুন তথ্য নয়। তবে সম্প্রতি তার ব্লু টিকপ্রাপ্ত ভেরিফায়েড প্রোফাইল এবং এনসিপি-সমর্থিত বক্তৃতাসমূহ একে নতুন মাত্রা দিয়েছে। বিশ্বস্ত সূত্র মতে, তিনি সেনাবাহিনীতে একটি সমান্তরাল কমান্ড লাইন গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন—বিশেষ করে সিগন্যাল কোর ও ইন্টেলিজেন্স উইংয়ে। গত সপ্তাহে ৩৪ পদাতিক ডিভিশনে বিতর্কিত অফিসার বদলি তারই ইঙ্গিতবাহী।বরখাস্ত হওয়া পর থেকে হাসিনুর রহমান শুধু জঙ্গি মতবাদে অনড়ই থাকেননি, বরং মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জেহাদি সংস্থাগুলোর হয়ে কাজ শুরু করেছেন। হিজবুত তাহরীর ও হরকাতুল জিহাদের সাথে তার দৃঢ় যোগাযোগ রয়েছে।
এমনকি ইউরোপীয় কিছু মানবাধিকার সংস্থার আড়ালে ‘রিক্রুটমেন্ট ও ট্রান্সফার চ্যানেল’ পরিচালিত হচ্ছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে যুবকদের জিহাদে পাঠানো হচ্ছে—মূলত চাঁদার টাকায় নয়, বরং বৈধ ট্যাক্স-ব্যবস্থার ফাঁকে রাষ্ট্রীয় সহায়তায়।
ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) মূলত একটি রাজনৈতিক শেল কোম্পানি। গবেষণায় দেখা গেছে, দলটি কাতার-তুরস্ক-পাকিস্তান অক্ষের সহযোগিতায় পরিচালিত হয়। গত তিন মাসে তাদের অ্যাকাউন্টে করাচি হয়ে এসেছে ১২.৭ মিলিয়ন ডলার, যা ইসলামিক চ্যারিটি ফান্ডের মাধ্যমে ধোলাই হয়েছে। রাজনৈতিক মঞ্চে তারা ‘জনতার প্রতিনিধি’ হিসেবে কথা বললেও, আড়ালে মূল লক্ষ্য—জঙ্গি রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের অভ্যন্তরীণ নথিপত্র অনুযায়ী, ইতিমধ্যে এনএসআই, এসবি ও র্যাবে কিছু ‘সুনির্দিষ্ট’ বদলি সম্পন্ন হয়েছে। সন্দেহভাজন ইসলামপন্থীদের এসব পদে বসানো হয়েছে, যারা সাংবিধানিক কাঠামো নয়—’শরিয়াহ শাসন’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে।
পশ্চিমা কিছু রাষ্ট্রের রহস্যজনক নীরবতা এবং পরোক্ষ স্বীকৃতি এই ষড়যন্ত্রকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। ইসলামী রাষ্ট্র গঠনের এই পরিকল্পনা শুধু অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র নয়, এটি ইন্দো-প্যাসিফিক রিজিওনে ইসলামিক কৌশলগত প্যাকেজ হিসেবে কাজ করছে, যেখানে বাংলাদেশকে একটি নতুন ‘উপকারী ক্লায়েন্ট স্টেট’ হিসেবে গড়ে তুলতে চায় কিছু আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী।এই রূপরেখা অব্যাহত থাকলে ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশে একটি নতুন সংবিধান, নতুন নিরাপত্তা কাঠামো এবং পুরনো রাষ্ট্রচরিত্রের সম্পূর্ণ বিনাশ ঘটতে পারে। সংখ্যালঘু, নারী, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হবে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর কিছু দেশপ্রেমিক অংশ ইতিমধ্যে এই ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে সক্রিয় হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই অবস্থান শুধু বাহিনী নয়, গোটা জাতির জন্য শেষ আলো হয়ে উঠতে পারে। তবে প্রয়োজন সম্মিলিত সচেতনতা, গণপ্রতিরোধ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সুনির্দিষ্ট অবস্থান।
বাংলাদেশ আজ এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে, যেখানে একটি জাতির অস্তিত্ব, চেতনা এবং ভবিষ্যৎ—সবকিছু একটি ঘোষণাপত্রের ভেতর বন্দি। ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ শুধু একটি দলিল নয়, এটি একটি নব্য খেলাফতবাদী রাষ্ট্রকাঠামোর ঘোষণা। তাই প্রতিটি সচেতন নাগরিকের কর্তব্য এখন একটাই—এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, কথা বলা, এবং দেশের অস্তিত্ব রক্ষায় শপথ নেয়া।

 
                         
         
         
        