নাটোরে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে জামায়াতের ওয়ার্ড সভাপতি সহ চারজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। দোকান বন্ধ করে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে।
নাটোরের বড়াইগ্রামে জামায়াতে ইসলামীর এক ওয়ার্ড সভাপতিসহ চারজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযোগ—বাজারের দোকানে তালা লাগিয়ে প্রতি দোকান থেকে মাসিক চাঁদা দাবি। এই ঘটনা শুধু সাধারণ চাঁদাবাজি নয়, বরং এটি একটি রাজনৈতিক সংগঠনের বিকল্প অর্থায়নের কৌশল হতে পারে বলেও সন্দেহ করছেন বিশ্লেষকরা।
২৮ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় বড়াইগ্রাম উপজেলার আহাম্মেদপুর বাজারে স্থানীয় জামায়াত সভাপতি ও তার সহযোগীরা অন্তত ১০টি দোকানে জোর করে তালা লাগিয়ে দেন।
অভিযোগ, তারা প্রত্যেক ব্যবসায়ীর কাছে মাসে ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করেন।
দোকানদাররা তীব্র প্রতিবাদ জানালে, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে।
অবশেষে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালা খুলে দেন এবং চারজনকে আটক করেন।
বড়াইগ্রাম থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিচয়ে চাঁদা তোলার সংস্কৃতি দীর্ঘদিনের।
তবে এখনো যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাসিত বা নিষিদ্ধ রয়েছে, তাদের অনুসারীরা তৃণমূল পর্যায়ে তহবিল সংগ্রহের জন্য বিকল্প ও অবৈধ পথ বেছে নিচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে।
যদিও জামায়াত এখন আনুষ্ঠানিকভাবে নিষ্ক্রিয় বা নিষিদ্ধ, তবে বিভিন্ন জায়গায় তাদের অঘোষিত সাংগঠনিক তৎপরতা লক্ষণীয়।
ব্যবসায়ী বা ধর্মীয় তহবিলের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে একটি সুসংগঠিত অর্থনৈতিক চেইন গড়ে তোলার সম্ভাবনার কথাও বলছেন অনেকে।
এই ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের দ্রুত হস্তক্ষেপ স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয়তা নির্দেশ করে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন,
জামায়াতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান জানাতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ বার্তাও এখানে নিহিত থাকতে পারে।
এই ঘটনার পর স্থানীয় দোকানিরা ব্যবসা চালানো নিয়ে শঙ্কিত।
এমন চাঁদাবাজি যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না পায়, তবে পরবর্তীতে অন্যান্য রাজনৈতিক বা ধর্মীয় পরিচয়ের ছত্রছায়ায় এমন অপতৎপরতা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাটোরের ঘটনা একদিকে যেমন স্থানীয়ভাবে একটি চাঁদাবাজি মামলা, অন্যদিকে জাতীয় পর্যায়ে জামায়াতের অঘোষিত পুনর্বিন্যাস ও সাংগঠনিক ‘ফান্ডিং মডেল’-এর সম্ভাব্য ইঙ্গিত।
এখন দেখার বিষয়, সরকার ও প্রশাসন ভবিষ্যতে এই ধরণের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কতটা কঠোর হয়।
