আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশকারী বিতর্ক নতুন মোড় নিয়েছে। ধানমন্ডি ৩২ টেলিগ্রাম গ্রুপের কিছু সদস্যের অতীত ও বর্তমান কর্মকাণ্ড দলের আদর্শ ও নিরাপত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে একটি আদর্শিক দল হিসেবে বাংলাদেশে রাজনীতি করে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সংগঠনের কিছু অভ্যন্তরীণ সেল ও ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম ঘিরে দলের ভেতরে অনুপ্রবেশকারী ও আদর্শবিরোধী ব্যক্তিদের কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে। ধানমন্ডি ৩২ নামে পরিচিত একটি টেলিগ্রাম গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এখন দলীয় মহলে আলোচনার কেন্দ্রে।
সংশ্লিষ্ট প্রধান ব্যক্তি:
গ্রুপটির অ্যাডমিন মোহাম্মদ ইউসুফ কবির, যিনি অতীতে একটি চরমপন্থী ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভ্যন্তরীণ দলীয় পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।
তার আরও দুই ভাই—
- একজন উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন
- অন্যজন মহিউদ্দিন মাহি, যিনি বর্তমানে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত এবং বাংলাদেশবিরোধী ধর্মীয় বক্তার ঘনিষ্ঠ বলেও অভিযোগ রয়েছে
টেলিগ্রাম গ্রুপে ‘রাতের রাজনীতি’:
আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, ধানমন্ডি ৩২ টেলিগ্রাম গ্রুপে রাতভর কল মিটিং, নেতাকর্মীদের বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও তথ্যের অপব্যবহার করে দলীয় সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তার করার অপচেষ্টা চলেছে।
দলীয় পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে:
- অসংখ্য কর্মী রাতে ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন, কিন্তু মাঠ পর্যায়ে সক্রিয়তা নেই
- অনেক সিদ্ধান্তে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা উপেক্ষিত হচ্ছে
- গ্রুপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য দলবিরোধী মিডিয়া ও গোষ্ঠীতে পাচার হচ্ছে বলে সন্দেহ


অতীত রেকর্ড ও অনুপ্রবেশ:
২০১৬ সালে ইউসুফ কবিরের বিরুদ্ধে উগ্রবাদ সংশ্লিষ্ট গ্রেফতারের রেকর্ড রয়েছে, যা জামিনের পর ধামাচাপা দিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ফোরামে অনুপ্রবেশ করেছেন।
তার সংগঠনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে আদর্শিকভাবে দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সাংগঠনিক ক্ষয়: শুদ্ধি অভিযান জরুরি
এই ধরণের অনুপ্রবেশ দলীয় আদর্শ, নেতৃত্ব ও কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে।
আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতাই মনে করেন, এইসব ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে নজরদারি, জবাবদিহিতা এবং দলীয় শুদ্ধি অভিযান অবিলম্বে চালু করা জরুরি।
একটি আদর্শিক সংগঠনের জন্য বিশ্বাসঘাতকতা এবং অনুপ্রবেশ সবচেয়ে বড় বিপদ।
দলীয় কর্মীদের মধ্যেও প্রশ্ন উঠছে:
- কে আমাদের তথ্য পাচার করছে?
- কারা রাতভর গোপন মিটিংয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে?
- এইসব ব্যক্তিদের কীভাবে দলের বাইরে রাখা হবে?
আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত রাখতে এখন প্রয়োজন কঠোর তথ্যভিত্তিক সাংগঠনিক মূল্যায়ন ও পদক্ষেপ।
