 
                  রাজধানীতে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের লং মার্চে পুলিশের টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ। শাহবাগ থেকে যমুনা অভিমুখে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি।
রাজধানীতে উত্তেজনা ছড়ালো প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ঘোষিত ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। বুধবার (২৭ আগস্ট ২০২৫) বেলা দেড়টার দিকে শাহবাগ থেকে যমুনা অভিমুখে অগ্রসর হলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে।

শাহবাগ থেকে পদযাত্রা শুরু করার সময় শিক্ষার্থীরা তাদের তিন দফা দাবি নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।
তারা জানান, “অবৈধ ডিপ্লোমা কোটা অবসান চাই”, “কোটা না মেধায়, মেধায় মেধায়” ইত্যাদি স্লোগানের মধ্য দিয়ে তারা শান্তিপূর্ণভাবে যাত্রা করছিলেন।

কিন্তু ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি শুরু হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পুলিশ সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীরা ব্যারিকেড ভাঙতে চাইলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার স্বার্থে সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান নিক্ষেপ করা হয়।

এসময় কমপক্ষে ১০ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়া হয়। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অযথা হামলা চালিয়েছে পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ বারবার লাঠিচার্জ ও জলকামান ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে শিক্ষার্থীরা আবারও ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে জড়ো হলে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি
প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা তিনটি মূল দাবি উত্থাপন করেছেন—
- ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নামের আগে ‘প্রকৌশলী’ লিখতে না দেওয়া।
- ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাউকে পদোন্নতি দিয়ে নবম গ্রেডে উন্নীত না করা।
- দশম গ্রেডে চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কেবল স্নাতক প্রকৌশলীদের সুযোগ দেওয়া।
আন্দোলনের অঙ্গীকার
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এমনকি প্রয়োজনে যমুনা অভিমুখী পদযাত্রা আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
অন্যদিকে পুলিশের দাবি, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং রাজধানীতে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর কেন্দ্রীয় এলাকাজুড়ে এই পরিস্থিতির কারণে সাধারণ মানুষ ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং আশপাশের সড়কে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কোটা সংস্কার ও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের মর্যাদা প্রশ্নে উত্তেজনা বাড়তে পারে, যদি না সরকার দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করে।

 
                         
         
         
        