 
                  আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনসহ ১১ জনকে আজ (২৮ আগস্ট ২০২৫) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। শাহবাগে গোলটেবিল বৈঠকে উত্তেজনার পর তাদের আটক করা হয়।
লতিফ সিদ্দিকী, ঢাবি শিক্ষক কার্জনসহ ১১ জন ডিবি হেফাজতে ঢাকা মহানগরীর রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জনসহ অন্তত ১১ জনকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) প্রাঙ্গণ থেকে তাদের আটক করা হয়।
পরে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়ার পর জানানো হয়, ডিবি কার্যালয়ে তাদের হস্তান্তর করা হয়েছে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত ডিবিই নেবে।
গোলটেবিল বৈঠক ঘিরে উত্তেজনা
সকাল ১১টায় ডিআরইউর শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংবিধান’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সংগঠন মঞ্চ ৭১।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ ও সংবিধান রক্ষার আহ্বান জানানো হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল ড. কামাল হোসেনের।
প্রথম বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন অধ্যাপক কার্জন, যিনি অভিযোগ করেন—
“দেশের সংবিধান ছুড়ে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে এবং এর পেছনে জামায়াত-শিবির ও এনসিপি জড়িত।”
তিনি আরও দাবি করেন, “অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা হচ্ছে।”
তার বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই ‘জুলাই যোদ্ধা’ ব্যানারে কিছু যুবক মিলনায়তনে প্রবেশ করে স্লোগান দিতে থাকে।
তারা “লীগ ধর, জেলে ভর”, “জুলাইয়ের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার” ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে এবং অনুষ্ঠানের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে।
পুলিশের হস্তক্ষেপ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, যুবকরা উপস্থিত ব্যক্তিদের শারীরিকভাবে আক্রমণ করে। পরে রমনা বিভাগের এডিসি আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ সময় লতিফ সিদ্দিকী, কার্জনসহ ১১ জনকে ভ্যানে তুলে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যায়।
ঘটনার পর মিলনায়তনে ভাঙা টেবিল ও ছিঁড়ে ফেলা ব্যানার পড়ে থাকতে দেখা যায়। মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বলেন, “এটা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মিলিত অনুষ্ঠান।
কিন্তু হঠাৎ করেই হামলাকারীরা হট্টগোল সৃষ্টি করে।”
রাজনৈতিক তাৎপর্য
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান ইস্যুকে ঘিরে এই ঘটনাটি কেবল প্রশাসনিক নয়, বরং আসন্ন রাজনৈতিক অস্থিরতারও পূর্বাভাস বহন করছে।
কারণ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, সংবিধান এবং সমসাময়িক রাজনীতিকে কেন্দ্র করে যে সংঘাত তৈরি হচ্ছে, তা আগামী দিনে আরও তীব্র হতে পারে।

 
                         
         
         
        