ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বৈত শুল্ক আরোপ ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ফলে যুক্তরাষ্ট্র–ভারত সম্পর্ক চরম টানাপোড়েনে। নরেন্দ্র মোদি এখন রাশিয়া ও চীনের দিকে ঝুঁকছেন, যা ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ভেবে থাকেন যে তিনি ভারতকে বশে আনতে পারবেন, তবে ঘটনাপ্রবাহ মোটেও তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোচ্ছে না। নরেন্দ্র মোদি শুধু অনমনীয় অবস্থানই নেননি, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টকে কার্যত নীরব আচরণও দেখাচ্ছেন। আগস্টের শুরুর দিকে ট্রাম্প অপ্রত্যাশিতভাবে ভারতকে কঠোর দ্বৈত শুল্কের আওতায় নেওয়ার পর থেকে তিনি চারবার মোদিকে ফোন করেছেন—
কাজানের ব্রিকস সম্মেলনে যখন নরেন্দ্র মোদি, ভ্লাদিমির পুতিন ও শি জিনপিং একত্রিত হলেন, তখন স্পষ্ট হলো
—ডোনাল্ড ট্রাম্পের কৌশল ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাববলয়ে টেনে আনার বদলে উল্টো তাদের আরও দূরে ঠেলে দিয়েছে।
মোদির অনমনীয় অবস্থান
অপ্রত্যাশিতভাবে দ্বৈত শুল্ক আরোপের পর ট্রাম্প চারবার মোদিকে ফোন করলেও তিনি ধরেননি। এর পরিবর্তে মোদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং চীনের আয়োজিত নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এত সরল শক্তি প্রয়োগের কৌশল যুক্তরাষ্ট্রকে ভারসাম্যহীন করেছে এবং ভারতকে আরও ঘনিষ্ঠ করেছে মস্কো ও বেইজিংয়ের সঙ্গে।
পাকিস্তান–যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠতা ও ভারতের ক্ষোভ
ট্রাম্পের পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানানো নয়াদিল্লিকে আরও বিচ্ছিন্ন করেছে।
ভারতীয় বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, পাকিস্তানকে গুরুত্ব দিয়ে ট্রাম্প ভারতের প্রতি কূটনৈতিক আঘাত করেছেন।
অর্থনৈতিক সংঘর্ষ
ভারতের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ এবং রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানির কারণে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ ওয়াশিংটন–দিল্লি সম্পর্কে বড় ধরনের সংকট তৈরি করেছে।
অথচ ইউরোপ, জাপান বা তুরস্ক একইভাবে রুশ তেল কিনলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশ
সম্পূর্ণ বিচ্ছেদের সম্ভাবনা কম হলেও সম্পর্ক এখন আর আগের মতো ব্যক্তিগত বন্ধুত্বপূর্ণ থাকবে না।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, “ব্রোমান্স শেষ—এখন শুধু প্রয়োজনের তাগিদে সম্পর্ক টিকবে।”
মোদি হয়তো প্রকাশ্যে কোয়াড নিয়ে আগ্রহ কম দেখাবেন, তবে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের সবচেয়ে বড় রপ্তানিবাজার হওয়ায় কৌশলগত সমঝোতা বজায় থাকবে।
