 
                  ইউনূস সরকারের দুদক সায়মা ওয়াজেদ ও সূচনা ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও WHO-র দৃষ্টিকোণ থেকে এর আন্তর্জাতিক প্রভাব বিশ্লেষণ পড়ুন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় ক্ষমতাসীন দমনমূলক শক্তির কৌশল নতুন নয়। কিন্তু বর্তমান ইউনূস সরকার ও তার আজ্ঞাবহ দুর্নীতি দমন কমিশন (ACC) যে পথে হাঁটছে, তা শুধু ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা নয়, বরং রাজনৈতিকভাবে পুরো একটি পরিবারকে ধ্বংস করার নীলনকশা। সর্বশেষ শিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা, বিশ্বখ্যাত মানসিক স্বাস্থ্য অধিকারকর্মী এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO SEARO) আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ। তার প্রতিষ্ঠান সূচনা ফাউন্ডেশন (SF)-এর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলাটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার এক কৌশল মাত্র।
দুদক যে অভিযোগগুলো তুলেছে, সেগুলো হলো—
সূচনা ফাউন্ডেশন নাকি কাগুজে প্রতিষ্ঠান।
অনুদানের নামে ঘুষ গ্রহণ।
করমুক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে এনবিআরের ক্ষমতার অপব্যবহার।
সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে “সন্দেহজনক লেনদেন।”
বাস্তবতা
সূচনা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালে এবং গত দশকে অটিজম, NDDs ও মানসিক স্বাস্থ্য খাতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এর কার্যালয় ছিল, যা ২০২৪ ও ২০২৫ সালে ইউনূসপন্থী সন্ত্রাসীদের হামলায় ধ্বংস হয়ে যায়।
একটি নিবন্ধিত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে SF দেশীয় ও আন্তর্জাতিক তহবিল গ্রহণের পূর্ণ আইনি অধিকার রাখে।
এনবিআরের করমুক্তি দেওয়া ছিল আইনসঙ্গত ও বৈধ, যা বাংলাদেশের বহু এনজিওর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
সায়মা ওয়াজেদ ২০০৯ সাল থেকে অটিজম সচেতনতা ও নীতি প্রণয়নে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
তার সাফল্যগুলোর মধ্যে রয়েছে—
- WHO-এর আঞ্চলিক অটিজম কৌশল প্রণয়নে সহলেখক।
- WHO মহাপরিচালকের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন।
- যুক্তরাজ্যের চ্যাথাম হাউস কমিশন ফর ইউনিভার্সাল হেলথ-এর কমিশনার।
- বাংলাদেশে জাতীয় অটিজম ও NDDs কৌশল প্রণয়ন, যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত।
একজন বিশ্বস্বীকৃত বিশেষজ্ঞকে “ঘুষ নেওয়া”র মতো হাস্যকর অভিযোগে টার্গেট করা আসলে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে প্রহসন।
সায়মা ওয়াজেদ আন্তর্জাতিক মানসিক স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিনের কর্মী।
তাকে টার্গেট করার মাধ্যমে মূলত যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রশক্তিগুলোকে ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে।
ওয়াশিংটন জানে— ইউনূস সরকারের এই ধরনের মামলা দক্ষিণ এশিয়ায় মানবাধিকার ও সুশাসনের প্রশ্নে তাদের অবস্থানকে দুর্বল করে।
ভারত বহুবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার ওপর জোর দিয়েছে।
সায়মা ওয়াজেদকে টার্গেট করার মানে হলো— দিল্লির সঙ্গে সম্পর্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
কারণ অটিজম ও মানসিক স্বাস্থ্য খাতে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ কর্মসূচি ছিল আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত।
WHO ইতিমধ্যে সায়মা ওয়াজেদকে আঞ্চলিক পরিচালক নির্বাচিত করেছে, যা তার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ।
এখন যদি তাকে দুর্নীতির নামে হেয় করার চেষ্টা হয়, তবে WHO-এর মর্যাদাও প্রশ্নের মুখে পড়ে।
এই অভিযোগ আসলে WHO-এর একটি সিদ্ধান্তকেও অস্বীকার করার শামিল।
ইউনূস সরকারের কৌশল একেবারেই স্পষ্ট:
গণমাধ্যমে ভিত্তিহীন অভিযোগ ছড়ানো।
দুদকের মাধ্যমে লোক দেখানো তদন্ত শুরু।
মামলার নামে হয়রানি।
নিয়ন্ত্রিত আদালতে একতরফা রায়।
এটি “পূর্বাচল দুর্নীতি মামলা”-র মতোই সাজানো নাটক, যেখানে প্রমাণ নয় বরং প্রতিহিংসাই মূল চালিকাশক্তি।
অর্থনীতি, শিক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন, আইনশৃঙ্খলা—প্রতিটি খাতে চরম ব্যর্থতার দায় এড়াতে সরকার এখন বিরোধী কণ্ঠকে দমন করতে চায়।
- শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
- লাখো মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছে।
- শেখ হাসিনার পরিবারের বাড়িঘর ও অফিসে হামলা চালানো হয়েছে।
কিন্তু জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থন টলানো যায়নি।
সায়মা ওয়াজেদ ও সূচনা ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে মামলা কেবল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ।
এই অপচেষ্টা বাংলাদেশের ভেতরেই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রতিরোধের মুখে পড়বে।
ইতিহাস সাক্ষী—ভয় দেখিয়ে বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও তার পরিবারকে কখনো দমিয়ে রাখা যায়নি, এবারও যাবে না।

 
                         
         
         
        