জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাকসু নির্বাচনে জামায়াতের কোম্পানির ব্যালট ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে ছাত্রদল। তারা বলছে, শিবিরকে জয়ী করতেই কারচুপির নীলনকশা চলছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে আবারো কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অভিযোগ করে, জামায়াতের একটি অখ্যাত কোম্পানির সরবরাহ করা ব্যালট পেপার ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ চলছে, যার মাধ্যমে ছাত্রশিবিরপন্থী প্রার্থীদের বিজয়ী করার পরিকল্পিত নীলনকশা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
ছাত্রদলের অভিযোগ
ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী মো. শেখ সাদী হাসান লিখিত বক্তব্যে বলেন—
“আমরা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করেছিলাম। কিন্তু ভোটগ্রহণের আগের রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে খবর যে, নির্বাচন কমিশন যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই জামায়াতের কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ভোটগণনার ওএমআর মেশিন সংগ্রহ করেছে।”
তিনি দাবি করেন, এ ধরনের বিতর্কিত কোম্পানির পণ্য ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশন সরাসরি কারচুপির সুযোগ তৈরি করেছে।
ভোট প্রক্রিয়ায় হঠাৎ পরিবর্তন
অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তীব্র চাপের মুখে নির্বাচন কমিশন ওএমআর মেশিন বাতিল করে ম্যানুয়াল ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নেয়।
কিন্তু বিতর্কিত কোম্পানির সরবরাহ করা ব্যালট পেপারেই ভোট গ্রহণ চলছে। ছাত্রদলের অভিযোগ, এতে শিবিরপন্থীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে আলাদা ব্যালট তৈরি করে কারচুপির সুযোগ পাচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ
ছাত্রদল লিখিত বক্তব্যে আরও জানায়, তারা নতুন ব্যালট পেপার ব্যবহারের দাবি জানালেও নির্বাচন কমিশন তা অগ্রাহ্য করেছে।
এ কারণে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
“নির্বাচন কমিশনের এই পক্ষপাতমূলক আচরণ প্রমাণ করছে, তারা ছাত্রশিবিরের প্রার্থীদের জয়ী করতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।”
প্রেক্ষাপট ও বিশ্লেষণ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে জামায়াত-শিবিরের প্রভাব নিয়ে আলোচনা চলছে।
বিশেষত নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বিতর্কিত কোম্পানি জড়িত থাকার খবর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে কলুষিত করছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ছাত্রশিবিরকে টিকিয়ে রাখতে জামায়াত একটি সুপরিকল্পিত নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে, যার অংশ হিসেবে তাদের প্রভাবিত কোম্পানির ব্যালট ব্যবহার হচ্ছে।
ছাত্রদলের অভিযোগ ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে শিক্ষার্থী সমাজে ক্ষোভ বাড়ছে।
এখন প্রশ্ন—জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কি সত্যিই স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হবে, নাকি আবারও জামায়াত-শিবিরের কারচুপির শিকার হবে?
