জুলাই সনদের বাস্তবায়নসহ চার দফা দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ আটটি রাজনৈতিক দল। দেশ কি নতুন করে সংঘাত ও গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে?
চার দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচিতে জামায়াত-এনসিপিসহ আট দল: গৃহযুদ্ধের পথে দেশ?
বাংলাদেশের রাজনীতি আবারও অস্থিতিশীলতার নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে। জুলাই সনদের বাস্তবায়নসহ চার দফা দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ মোট আটটি রাজনৈতিক দল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এ ধরনের অভিন্ন কর্মসূচি দেশকে নতুন করে সংঘাত, এমনকি গৃহযুদ্ধের দিকেও ঠেলে দিতে পারে।
চার দফা দাবির মূল বিষয়:
- সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (PR) জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন।
- সবার জন্য সমান নির্বাচনী সুযোগ নিশ্চিত করা।
- জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে তার আলোকে জাতীয় নির্বাচন।
- ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও ১৪ দলীয় জোটের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
সূত্র মতে, ইতিমধ্যে কয়েক দফা বৈঠক শেষে এই আটটি দল একটি অভিন্ন রূপরেখায় একমত হয়েছে। বিশেষ করে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও তা অনুযায়ী নির্বাচনের দাবি তাদের কর্মসূচির মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
যেসব দল যুগপৎ কর্মসূচিতে যুক্ত হচ্ছে:
- জামায়াতে ইসলামী
- এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি)
- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (মাওলানা মামুনুল হক নেতৃত্বাধীন)
- খেলাফত মজলিস (আবদুল বাছিত আজাদ ও আহমদ আবদুল কাদের নেতৃত্বাধীন)
- গণ অধিকার পরিষদ (নূরুল হক নেতৃত্বাধীন)
- আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি (মজিবুর রহমান মঞ্জু নেতৃত্বাধীন)
- বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি (সরওয়ার কামাল আজিজীর নেতৃত্বাধীন)
দলগুলো আলাদাভাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচি ঘোষণা করবে। জানা গেছে, ইসলামী আন্দোলন সোমবার এবং খেলাফত মজলিস রবিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা
বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির মতো বড় রাজনৈতিক শক্তি সরাসরি এই আন্দোলনে যুক্ত না হলেও জামায়াতসহ উগ্রবাদী ধারার শক্তিগুলোর অভিন্ন কর্মসূচি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষত, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই কর্মসূচি রাজপথে সংঘাত ডেকে আনতে পারে।
অন্যদিকে, আট দলের নেতারা দাবি করছেন—“ফ্যাসিবাদী” শক্তি হিসেবে যেসব দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ ছিল, তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এ অবস্থায় রাজনৈতিক বিভাজন আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতি আবারও এক সঙ্কটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে। আট দলের যুগপৎ কর্মসূচি যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে রাজনৈতিক সংঘাত অবশ্যম্ভাবী।
দেশ কি সত্যিই নতুন করে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে—নাকি এটি ক্ষমতার পালাবদলের জন্য একটি কৌশলগত নাটক? সময়ই এর উত্তর দেবে।
