ঢাকার রমনা থানায় জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারীসহ ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রঅধিকার পরিষদ।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারো উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা) এবং বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সাম্প্রতিক সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, জাপা চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের ও মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীসহ প্রায় ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আবেদন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রঅধিকার পরিষদ।
মামলার আবেদনের বিবরণ
আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা মডেল থানায় মামলার আবেদন করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট। তিনি জানান, জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করেছে।
তার ভাষায়,
“জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে। আমি এতদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। গতকাল (সোমবার) হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আজ মামলা করতে এসেছি।”
এজাহারে জি এম কাদেরকে এক নম্বর আসামি এবং মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দীন মিলনসহ মোট ১৮ জনকে নামীয় আসামি করা হয়েছে।
পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকেও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রমনা মডেল থানার ওসি আবেদনটি প্রাথমিকভাবে গ্রহণ করেছেন এবং যাচাই-বাছাই শেষে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে বলে জানিয়েছেন।
সংঘর্ষের প্রেক্ষাপট
গত ২৯ আগস্ট রাতে রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাপা ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়।
এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হস্তক্ষেপ করে।
ঘটনার সময় গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতা নুরুল হক নুর, রাশেদ খানসহ বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন।
সংঘর্ষের পর জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।
এই মামলার আবেদনের মধ্য দিয়ে জাপা এবং গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেল।
একদিকে জাপা নেতারা দাবি করছেন, তাদের অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে গণঅধিকার পরিষদের নেতারা।
অপরদিকে, গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে অভিযোগ আনা হচ্ছে যে, জাপা নেতৃত্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে—এ মামলা রেকর্ড হলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আরও কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা সামনের দিনে বিরোধী দলের ভেতরকার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে আরও স্পষ্ট করে তুলতে পারে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা সবসময়ই সংঘাতপূর্ণ।
তবে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ এবং পরবর্তী মামলার আবেদন এ দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে আরও অস্থির করে তুলছে।
এখন দেখার বিষয়—রমনা থানায় দায়ের করা এ মামলাটি কত দ্রুত রেকর্ড হয় এবং আদালতের সামনে কী ধরনের আইনি লড়াই গড়ে ওঠে।
