ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সভায় গণ-অধিকার পরিষদের রাশেদ খান অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের মিছিল দিন দিন বড় হচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে ঐকমত্য কমিশনের সভা ঘিরে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। গণ-অধিকার পরিষদের নেতা রাশেদ খান অভিযোগ তুলেছেন যে, আওয়ামী লীগের মিছিল দিন দিন বড় হচ্ছে, অথচ বিরোধী মতকে উপেক্ষা করা হচ্ছে।
রাশেদ খানের অভিযোগ
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাশেদ খান বলেন—
“ঐকমত্য কমিশনের নামে একটি মঞ্চ তৈরি করা হলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের জমায়েত ও মিছিল ক্রমেই বড় হচ্ছে। অথচ বিরোধী দলগুলোকে মাঠে নামতে বিভিন্ন অজুহাতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হচ্ছে, সরকার এখনো গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ।”
তার মতে, রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও মাঠের বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের আধিপত্যই বেশি ফুটে উঠছে।
আওয়ামী লীগের পাল্টা অবস্থান
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, তাদের সমাবেশ কিংবা মিছিল জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণেরই বহিঃপ্রকাশ।
ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় তারা গণতান্ত্রিক চর্চাকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর এবং যে কোনো গঠনমূলক পরামর্শ গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
বিশ্লেষণ
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ঐকমত্য কমিশনের সভা জাতীয় সংলাপের মতোই একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। তবে এ ধরনের আলোচনায় যদি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে, তাহলে কমিশনের প্রতি আস্থা কমে যাবে।
বিশেষত, যে সময়ে দেশের জনগণ রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে স্থিতিশীলতা প্রত্যাশা করছে, সেই সময়ে আওয়ামী লীগের ক্রমবর্ধমান মিছিল ও বিরোধী দলের অভিযোগ রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে।
গণতান্ত্রিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্ব
- ঐকমত্য কমিশন মূলত দলগুলোর মধ্যে ন্যূনতম সমঝোতা তৈরির জন্য গঠিত হয়েছে।
- কিন্তু বিরোধী দলগুলোর দাবি, সমঝোতার মঞ্চকে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের বৈধতা বাড়াতে।
- এই পরিস্থিতিতে কমিশনের কার্যক্রম যদি বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়, তবে রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হতে পারে।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির সভা একটি বার্তা দিয়েছে যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঐকমত্য এখনো দুরূহ কাজ।
একদিকে আওয়ামী লীগ তাদের শক্তি প্রদর্শন করছে, অন্যদিকে বিরোধী দলগুলো সেটিকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য হুমকি বলছে।
আগামী দিনে ঐকমত্য কমিশন কীভাবে এই বিভাজন কমাবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
