বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য আমীর খসরু প্রশ্ন তুলেছেন—জামায়াত কি দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে ব্যর্থ রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা করছে?
বনানী, ঢাকা — বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সম্প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন যে, জামায়াতে ইসলামী কি বাংলাদেশকে ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র ’ পরিণত করার কোনো ষড়যন্ত্রে নিয়োজিত আছে না। রাজনীতির সংশ্লিষ্ট মহলে ও সামাজিক মাধ্যমে তার মন্তব্যটি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। খসরু সভায় বলেন, নির্বাচন নিয়ে অনীহা ও অচলাবস্থা সৃষ্টির পেছনে যে উদ্দেশ্য কাজ করছে তা কী নিছক কৌশল নাকি আরও ভীতিকর কোনো কৌশলগত লক্ষ্য—
যেমন দেশকে অস্থিতিশীল করে গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় ওঠা বন্ধ করা—এই প্রশ্ন এখন জনগণের মনে ঘোরে।
তিনি আরো বলেন, ‘গণতন্ত্রের জায়গায় মাঠ দখলের চেষ্টা হলে ওরা ভোট নয়, ভয় আর বিশৃঙ্খলা কাজে লাগায়।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খসরুর অভিযোগকে সরাসরি ‘সাজানো’ বা ‘অভিযোগমূলক’ বিবৃতি হিসেবে দেখা উচিৎ নয়;
বরং এটি দেশের রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার তীব্রতা ও সন্দেহের প্রতিফলন।
বিশেষ করে যেসব সময়কালে নির্বাচনী অচলাবস্থা, প্রশাসনিক আপত্তি ও সামাজিক আন্দোলন একসাথে দেখা যায়,
তখন কর্মকাণ্ডগুলোর উদ্দেশ্য ও পরিণতি নিয়ে নানা সন্দেহ তৈরি হয়।
তবে রাজনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের সদস্যদের একাংশ বলেন,
কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এত গুরুতর অভিযোগ প্রস্তাব করার আগে প্রমাণ-ভিত্তিক তদন্ত ও সংসদীয় তদারকি জরুরি।
তারা সতর্ক করেছেন—অতিশয়করণ বা অপরের বিরুদ্ধে নৃশংস সামরিকতায় অভিযুক্ত করে দেওয়ার কৌশল
রাজনৈতিক খেলার অংশ হলে তা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
ফলে প্রশ্ন দাঁড়ায়—যদি জামায়াতের উদ্দেশ্য সত্যিই দেশের অস্থিতিশীলতা বাড়ানো হয়, সরকারের ও রক্ষা বাহিনীর কৌশল কী হবে?
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও স্বাধীন তদন্তের পাশাপাশি রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, দফায় দফায় সংলাপ
এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিতে উদ্যোগ গ্রহণই সম্ভাব্য সমাধান বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অন্যদিকে জামায়াত নিজস্বভাবে এই ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে থাকে
এবং দাবি করে যে তাদের নীতি ও কর্মকাণ্ড মূলত সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণভিত্তিক।
ফলে আগামী দিনে এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পারদ বাড়লেও, বাস্তব রাজনৈতিক ব্যবস্থার জন্য দরকার আত্মঘাতী অপপ্রচারের বদলে প্রমাণভিত্তিক, সংলাপ ভিত্তিক সমাধান।
শেষ পর্যন্ত, এই বিতর্ক কেবল রাজনৈতিক আক্রমণ প্রতিরোধের অনেক বড় ইস্যুই নয় — এটি দেশের নির্বাচন, নিরাপত্তা ও সামাজিক একতার প্রশ্নকেই স্পর্শ করছে।
