জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তাড়িয়াপাড়া মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরে সাতটি প্রতিমা নষ্ট হয়েছে। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে। এই ঘটনার সামাজিক প্রভাব ও বিশ্লেষণ পড়ুন।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তাড়িয়াপাড়া পূজা মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় আবারও সামনে এলো বাংলাদেশের ধর্মীয় সহনশীলতার বাস্তব চিত্র। শনিবার গভীর রাতে হঠাৎ মন্দিরে ঢুকে দুর্বৃত্তরা সাতটি প্রতিমার মাথা ও বিভিন্ন অংশ ভেঙে দেয়। পরের দিন সকালে মহালয়ার শুভক্ষণে প্রতিমা ভাঙা অবস্থায় দেখে হতভম্ব হয়ে যায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়।
পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান (৩৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে।
সে পৌরসভার শিমলাপল্লী গ্রামের বাসিন্দা।
বাংলাদেশে দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক মিলনমেলা।
প্রতিমা ভাঙচুর তাই শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় স্থাপনার ক্ষতি নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের মনোবল ও নিরাপত্তাবোধের ওপর সরাসরি আঘাত।
এমন ঘটনা শুধু সরিষাবাড়ী নয়—সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমা ভাঙচুরের পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন,
এর পেছনে রয়েছে পরিকল্পিত সন্ত্রাস, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অথবা সাম্প্রদায়িক উসকানি।
বিশেষ করে বড় ধর্মীয় উৎসবের সময় এই ধরনের হামলা বাড়ে।
পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে, যা প্রশংসনীয়।
তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—
এটি কি একজন ব্যক্তির ‘একক ঘটনা’, নাকি এর পেছনে কোনো সংগঠিত নেটওয়ার্ক কাজ করছে?
অতীতে দেখা গেছে, প্রতিমা ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িতরা অনেক সময় আইনি প্রক্রিয়ায় পার পেয়ে যায়, যার ফলে এই ধরনের অপরাধীদের মধ্যে দুঃসাহস বেড়ে যায়।
দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তি – প্রতিমা ভাঙচুরকে শুধুমাত্র ভাঙচুর নয়, বরং সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অংশ হিসেবে দেখা উচিত।
মন্দিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা – সিসিটিভি ক্যামেরা, পাহারাদার ও স্থানীয় প্রশাসনের বাড়তি তৎপরতা জরুরি।
সচেতনতা বৃদ্ধি – স্থানীয় পর্যায়ে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে সামাজিক সংগঠন ও নাগরিক সমাজকে সক্রিয় হতে হবে।
সরিষাবাড়ীর এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব নয়; এটি আমাদের প্রত্যেকের নৈতিক দায়িত্ব।
