বাংলাদেশে রঙিন বিপ্লবের দ্বিতীয় ধাপ ‘কগনিটিভ জিজোনেন্স রিডাকশন’ কীভাবে মানুষের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ ও জাতীয়তাবাদকে দুর্বল করছে, এবং পশ্চিমা গ্লোবালিস্ট ও ডিপ স্টেটের উদ্দেশ্য বিশ্লেষণ।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও সামাজিক ঘটনাগুলোকে মনোযোগ দিয়ে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, রঙিন বিপ্লবের দ্বিতীয় ধাপ বা “ফেজ টু অপারেশন” সরাসরি দেশের সাংস্কৃতিক ও জাতীয় কাঠামোকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে, কগনিটিভ জিজোনেন্স রিডাকশন (Cognitive Dissonance Reduction) নামক এই কার্যক্রমের লক্ষ্য মানুষের মনকে এমন একটি অবস্থায় নিয়ে যাওয়া যেখানে তারা বাস্তবতা ও সাংস্কৃতিক অভ্যাসের মধ্যে বিরোধীতা অনুভব করতে থাকে।
এই ফেজে লক্ষ্য করা যায়, প্রথাগত মূল্যবোধ, ধর্মীয় ও জাতীয় অভ্যন্তরীণ নৈতিকতা, এবং জনগণের সাংস্কৃতিক চেতনা ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ:
কবর থেকে লাশ তুলে পুড়িয়ে দেওয়া
জিয়ার মাজারে লাশ ঝুলিয়ে রাখা
সরকারী ছত্রছায়ায় মব সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষ হত্যা
এগুলো শুধুমাত্র সামাজিক আতঙ্ক সৃষ্টির ঘটনা নয়; বরং এটি মানুষের মানসিক কাঠামোতে বিভ্রান্তি ও অসঙ্গতি তৈরি করার একটি সুচিন্তিত কৌশল।
বারবার এই ধরণের ঘটনা মানুষের মনের সাংস্কৃতিক কনস্ট্রাক্টকে ভেঙে দেয়, ফলে মানুষ একটি “সম্ভবের দেশ” বা reality-detached mindset-এ বাস করতে শুরু করে।
এই প্রক্রিয়ার ফলস্বরূপ, লোকেরা কোনো সাংস্কৃতিক বা জাতীয় মূল্যবোধকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করতে পারে না।
তারা শুধুমাত্র ইন্দ্রিয়ের উপভোগ, ধন-সম্পদ অর্জন বা ব্যক্তিগত সুবিধা-সুবিধা মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থাপন করে।
ফলে, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে বিচ্যুত একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যা এলজিবিটিকিউ (LGBTQ) সমাজের প্রসারকে স্বাভাবিক এবং গ্রহণযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করে।
এই ধরণের পরিস্থিতিতে দেশের জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক শক্তি দুর্বল হয়, যা দেশপ্রেম, আত্মসম্মান এবং সামাজিক সংহতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পশ্চিমা গ্লোবালিস্ট এবং মার্কিন ডিপ স্টেটের উদ্দেশ্য মূলত বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি এবং সামাজিক সংহতি দূর্বল করা।
এটি করার মাধ্যমে তারা নিজেদের কৌশলগত প্রভাব এবং রাজনৈতিক নীতি প্রয়োগে সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের অবৈধ ও প্রভাবিত অবস্থানও এই প্রসঙ্গে একটি বড় ভূমিকা পালন করছে।
দেশীয় সংস্কৃতি, ধর্মীয় মূল্যবোধ, এবং জাতীয় চেতনা দুর্বল হলে, আন্তর্জাতিক শক্তি তাদের কৌশল বাস্তবায়নে আরও সহজ হয়।
তাই কগনিটিভ জিজোনেন্স রিডাকশন শুধুমাত্র মনস্তাত্ত্বিক একটি প্রক্রিয়া নয়; এটি সামাজিক ও রাজনৈতিক স্তরে একটি সুপরিকল্পিত অপারেশন।
পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশকে একটি সাংস্কৃতিক ও জাতীয় সঙ্কটের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে যা দেশের ঐতিহ্য ও সমাজের ভিত্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
সাধারণ জনগণকে সচেতন করা এবং সাংস্কৃতিক চেতনা পুনরুদ্ধার করা এই ফেজের প্রতিক্রিয়ায় একমাত্র শক্তিশালী প্রতিরোধ হতে পারে।
