 
                  যুক্তরাষ্ট্র সফরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার পলিটিশিয়ানদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে, অথচ নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরকে ঘিরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সফরসঙ্গী হিসেবে বিএনপি, জামায়াত এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র নেতাদের অন্তর্ভুক্তি এবং নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে এনসিপি নেতা আখতার হোসেনের উপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র সমালোচনা উঠেছে। বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানা সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন—কেন সরকার এমন এক সফরে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে নিল, অথচ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলো?
রুমিন ফারহানা টেলিভিশন টকশোতে বলেন,
ইউনূস সরকার জানতো অতীতে তার সফরসঙ্গীরা বিদেশে নানা ধরনের হেনস্থার শিকার হয়েছেন।
তারপরও কেন রাজনৈতিক নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হলো?
তার ভাষায়, “তাদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, অথচ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি।”
সবচেয়ে বড় সমালোচনার জায়গা হলো টিমের বিভক্তি।
সরকারি প্রতিনিধিরা এক হোটেলে, আর বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি নেতারা অন্য হোটেলে অবস্থান করেছেন।
বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময়ও দেখা যায় ভিন্ন গেট ব্যবহার করা হয়েছে।
জামায়াতের নেতারা এক গেট দিয়ে বের হলেও বিএনপি মহাসচিব ও এনসিপি নেতারা অন্য গেট দিয়ে বের হয়েছেন।
এ ধরনের বিভক্তি “অভ্যন্তরীণ মিসকমিউনিকেশন” নাকি ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপ—তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে।
রুমিন ফারহানা আরও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, জামায়াতের কাছে আগে থেকেই বিমানবন্দরের পরিস্থিতির খবর ছিল কি না।
যদি থেকে থাকে, তা কীভাবে তাদের কাছে গেল?
কেন বিএনপি ও এনসিপির সঙ্গে শেয়ার করা হলো না?
এতে কি বোঝা যায় সরকারের নিরাপত্তা কাঠামোতে ত্রুটি ছিল, নাকি কৌশলগতভাবে দলগুলোর মধ্যে বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা হয়েছে?
এই ঘটনার ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
বিশেষ করে বিদেশ সফরে নিরাপত্তার ঘাটতি এবং সফরসঙ্গীদের ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা রাজনৈতিক অস্থিরতাকে আরও বাড়াতে পারে।
নিরাপত্তা ব্যর্থতার দায়ভার কে নেবে—সরকার, নাকি বিদেশি দূতাবাস-দূতালয়?
রুমিনের বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে, সরকারের অব্যবস্থাপনা ও দূতাবাসের মিসইনফরমেশন এই ঘটনার মূল কারণ।
ড. ইউনূসের এই সফর ইতিবাচক কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি করার কথা ছিল।
কিন্তু সফরসঙ্গী বাছাই, নিরাপত্তা ঘাটতি ও বিভক্ত টিম ম্যানেজমেন্ট বরং সরকারের জন্য নতুন সংকট তৈরি করেছে।
রুমিন ফারহানার অভিযোগ শুধু সমালোচনা নয়, বরং এটি সরকারের নীতিগত দুর্বলতা ও কৌশলগত ভুলের দিকেই ইঙ্গিত করছে।
ফলে এই প্রশ্নগুলো এখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং আন্তর্জাতিক মহলেও গুরুত্ব পাচ্ছে।

 
                         
         
         
        