১০০ বছর বয়সেও সক্রিয় মাহাথির মোহাম্মদ জানালেন তার দীর্ঘায়ুর গোপন মন্ত্র। ফিলিস্তিন, চীন-আমেরিকা সম্পর্ক ও নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন এক সাক্ষাৎকারে।
মালয়েশিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এবার ১০০ বছরে পা রেখেছেন, আর জন্মদিনেও তাকে দেখা গেছে কর্মব্যস্ত ও সচল। শতবর্ষে এসে তিনি তার দীর্ঘায়ুর রহস্য শেয়ার করেছেন, যেখানে মূলত তিনটি অভ্যাসের কথা উঠে এসেছে— অল্প খাওয়া, নিয়মিত কাজ করা ও বিশ্রামের লোভ এড়িয়ে চলা।
কুয়ালালামপুরের দক্ষিণে পুত্রজয়ায় নিজ দপ্তরে বসেই তিনি জন্মদিনটি কাটিয়েছেন অন্যান্য দিনের মতোই— লেখালেখি ও বিশ্লেষণে।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাহাথির বলেন, “আমি সব সময় কাজ করি, বিশ্রাম নিই না। মন ও শরীরকে সব সময় সচল রাখি। এটিই দীর্ঘায়ুর আসল চাবিকাঠি।”
গাজা নিয়ে তার কণ্ঠ সোচ্চার
জন্মদিনের দিনেও মাহাথির গাজার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “গাজায় ৬৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন,
যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এটি ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।”
গণহত্যার এই বাস্তবতাকে তিনি বসনিয়া ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইহুদি নিধনের সঙ্গে তুলনা করেন।
বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, “ইসরাইলিরা নিজেরাই যেভাবে ভুগেছে, তারা কেন একই আচরণ অন্যদের সঙ্গে করছে?”
জীবনের সংগ্রাম ও সাফল্য
তিনবার হার্ট অ্যাটাকের পরও টিকে থাকা মাহাথির মালয়েশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রধানমন্ত্রী (২৪ বছর)।
প্রথমবার ক্ষমতায় আসেন ১৯৮১ সালে এবং দ্বিতীয়বার ফিরে আসেন ২০১৮ সালে, বয়স তখন ৯২।
তার হাত ধরেই কৃষিনির্ভর মালয়েশিয়া এক আধুনিক শিল্পোন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
চীন ও আমেরিকা নিয়ে বিশ্লেষণ
মাহাথির বলেন, “চীন আগামী ১০ বছরে আমেরিকাকে ছাড়িয়ে যাবে। চীনারা কঠোর পরিশ্রমী ও দক্ষ।
এদিকে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ উৎপাদন খরচ বাড়ায় তারা আর প্রতিযোগিতা করতে পারবে না।”
শতবর্ষেও কর্মচঞ্চল
প্রতিদিন হাঁটা, ব্যায়াম, অফিস যাওয়া, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার ও বিদেশ ভ্রমণ— সবই এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন মাহাথির।
দীর্ঘায়ুর মন্ত্র হিসেবে তিনি বলেন, “খাবার যখন সবচেয়ে সুস্বাদু লাগে, তখনই খাওয়া বন্ধ করো”— এটি তার মায়ের উপদেশ।
