শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টারিং করেছে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গ্রেপ্তার-নির্যাতনের মাঝেও তাদের এই পদক্ষেপ গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। বঙ্গবন্ধু কন্যা, বাংলাদেশের আধুনিক রাজনীতির সবচেয়ে আলোচিত ও দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন। এ বছরটি বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে, কারণ চলমান দমন-পীড়ন, গ্রেপ্তার-নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ সত্ত্বেও ঢাকা শহরজুড়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সাহসী উদ্যোগে পোস্টারিং করেছেন।
“আসবে আবার শুভদিন, জননেত্রীর জন্মদিন”—এমন স্লোগানে ভেসে গেছে ঢাকার ব্যস্ত সড়ক, দেয়াল আর জনাকীর্ণ স্থানগুলো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে এই পোস্টারগুলোর ছবি।
ইউনূস সরকারের সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার, হয়রানি, এমনকি প্রাণনাশের ভয়ও বিরাজ করছে।

কিন্তু জন্মদিনে ঢাকাজুড়ে পোস্টারিং প্রমাণ করেছে—দলের তৃণমূল এখনো উদ্দীপ্ত, ভয়কে উপেক্ষা করে তারা রাজনৈতিক উপস্থিতি জানান দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
এই প্রতীকী কর্মসূচি কেবল একটি জন্মদিন উদযাপন নয়, বরং এটি প্রতিরোধের ঘোষণা।
রাজনীতিতে বারবার দমননীতি ব্যবহার করা হলেও পোস্টারিং দেখিয়েছে, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তিকে সম্পূর্ণ দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
জন্মদিন উপলক্ষে শুধু রাজনৈতিক পোস্টারিং নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রবল সাড়া দেখা গেছে।
সাধারণ মানুষ দলমত নির্বিশেষে “শুভ জন্মদিন”, “বঙ্গবন্ধু কন্যা”, “মানবতার মা”, “বাঙালি জাতির আশার বাতিঘর” বিশেষণে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এখানে দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক লক্ষ্যণীয়:
রাজনৈতিক প্রতিরোধের সঙ্গে জনসাধারণের আবেগের সংযোগ।
জন্মদিনকে কেন্দ্র করে শেখ হাসিনার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতিফলন।
১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেওয়া শেখ হাসিনা শৈশব থেকেই রাজনৈতিক চেতনায় বেড়ে ওঠেন।
১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার পর তিনি সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্রে পরিণত হন।
১৯৯৬ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে দেশকে এগিয়ে নেন।
২০০৯ সাল থেকে দীর্ঘ শাসনকালে তিনি বাংলাদেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ডিজিটাল বাংলাদেশ, নারীর ক্ষমতায়ন ও মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়নে বিশ্ব স্বীকৃত উন্নয়ন মডেল উপহার দিয়েছেন।
ঢাকাজুড়ে পোস্টারিং কেবল জন্মদিনের শুভেচ্ছা নয়, এটি এক রাজনৈতিক বার্তা—
আওয়ামী লীগ এখনও মাঠে আছে।
ভয়, দমন ও গ্রেপ্তার দিয়ে রাজনৈতিক চেতনা নিভিয়ে ফেলা যায় না।
শেখ হাসিনার প্রতি দলের কর্মী ও সাধারণ মানুষের আবেগ এখনো দৃঢ়।
আসলে এই প্রতীকী কর্মসূচি একদিকে দলীয় সংহতির বহিঃপ্রকাশ, অন্যদিকে বর্তমান সরকারের বৈধতা প্রশ্নে সাধারণ মানুষের মনে জন্ম নেওয়া অসন্তোষকেও সামনে নিয়ে আসে।
শেখ হাসিনার জন্মদিন এ বছর এক নতুন রাজনৈতিক তাৎপর্য তৈরি করেছে।
পোস্টারিং ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সাড়া প্রমাণ করে, দমন-পীড়নের মাঝেও আওয়ামী লীগ এখনো তার রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রেখেছে।
“আসবে আবার শুভদিন, জননেত্রীর জন্মদিন”—এই স্লোগান হয়তো শুধু একটি পোস্টার নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনের প্রতীক হয়ে উঠছে।
