আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শুভেচ্ছা বার্তায় বলেছেন, উৎসব সর্বজনীন হলেও দেশ আজ সংকটে বন্দি। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ নির্মাণের আশা প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যখন অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে পথ চলছে, তখন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা বার্তা এক ভিন্ন মাত্রা সৃষ্টি করেছে। কেবল উৎসবের শুভেচ্ছা নয়, বরং এতে ধরা পড়েছে দেশের বর্তমান সংকট, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা এবং রাজনৈতিক প্রতিরোধের অঙ্গীকার।
শেখ হাসিনা তার বার্তায় স্পষ্ট করেছেন যে দুর্গাপূজা কেবল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব নয়, বরং এটি একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক উৎসব, যা ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার অংশগ্রহণে সর্বজনীন হয়ে ওঠে।
এটি বাংলাদেশের বহুত্ববাদী চেতনার প্রতিফলন।
ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব পারস্পরিক সহমর্মিতা ও একতার বন্ধনকে শক্তিশালী করেছে।
বার্তায় উঠে এসেছে এক তীব্র অভিযোগ—দেশের মানুষ কুচক্রী মহল ও ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর কাছে বন্দি হয়ে আছে।
রাজনৈতিকভাবে এর তাৎপর্য অনেক। আওয়ামী লীগ সভাপতির ভাষ্য অনুযায়ী, একটি শক্তি সমাজে ভেদাভেদ ছড়িয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতাকে জিইয়ে রাখতে চায়।
এর প্রতিফলন আমরা গত বছরের ৫ আগস্টের পর দেশজুড়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাতেও দেখেছি, যা আন্তর্জাতিক মহলকেও বিস্মিত করেছিল।
বাংলাদেশের ইতিহাসে আওয়ামী লীগ সবসময়ই ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির দাবিদার দল হিসেবে পরিচিত।
শেখ হাসিনার বার্তা সেই ঐতিহ্যকে নতুন করে মনে করিয়ে দেয়।
তার মতে, যেকোনো উগ্রবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধই দেশের টিকে থাকার পথ।
ফলে, এই বার্তা একদিকে যেমন উৎসবের শুভেচ্ছা, অন্যদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে অবস্থান পুনর্নির্ধারণের কৌশলও বটে।
শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনন্দ অশুভ শক্তিকে মুছে দেবে।
তার দৃষ্টিতে আগামীর বাংলাদেশ হবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও বৈচিত্র্যের বাংলাদেশ।
এটি নিছক কল্পনা নয়, বরং একটি রাজনৈতিক রূপরেখা, যেখানে বহুত্ববাদ ও সহাবস্থানকে রাষ্ট্রীয় দর্শনের কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয়েছে।
এই বার্তা মূলত তিনটি স্তরে পাঠ করা যায়:
সামাজিক বার্তা – ধর্মীয় সম্প্রীতি ও উৎসবের সর্বজনীনতার ওপর গুরুত্ব।
রাজনৈতিক বার্তা – বর্তমান সংকট ও বিভাজনমূলক রাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান।
ভবিষ্যত বার্তা – উগ্রবাদহীন, বহুত্ববাদী বাংলাদেশের রূপরেখা।
অতএব, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে শেখ হাসিনার এই বার্তা কেবল উৎসবের শুভেচ্ছা নয়, বরং বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
