রাজধানীর রাজপথে এক রিকশাচালকের আবেগঘন বক্তব্যে ফুটে উঠল শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা, রাজনৈতিক সংকট ও ভবিষ্যৎ শঙ্কার প্রতিধ্বনি।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক অদ্ভুত সময় চলছে। ক্ষমতার পালাবদল, রাজনৈতিক উত্তেজনা, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ—সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনজুড়ে অস্বস্তি আর ভয় ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্লেষকরা রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও রাজধানীর রাজপথে এক সাধারণ রিকশাচালকের কণ্ঠে ফুটে উঠেছে তৃণমূলের অনুভূতি। তার ভাষায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেবল একজন নেতা নন, তিনি “ম্যান অফ দা ম্যান”—যাকে ছাড়া দেশ চালানোই অসম্ভব।
রিকশাচালক তার বক্তব্যে স্মরণ করালেন ১৯৯৬ সাল থেকে শেখ হাসিনার নানা পদক্ষেপ।
গরিবের সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া, দুই টাকার বিস্কুট, বয়স্কদের ভাতা, প্রান্তিক মানুষের জন্য ভিজিএফ ও ভিজিডি কর্মসূচি, এমনকি বৃদ্ধদের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি—এসব সাধারণ মানুষের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলেছিল।
তার চোখে শেখ হাসিনা ছিলেন গরিবের মা, বোন, খালা—জনগণের আসল আশ্রয়।
তাই আক্ষেপ করে বললেন, “আমরা খেদাই দিছি, বড় ভুল করছি।
এখন বুঝতেছি কী হারাইলাম।”
তিনি সতর্ক করলেন, বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এখনো আওয়ামী লীগের সমর্থক, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি।
তাদের বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন হলে তা কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না।
তার ভয়, এ পরিস্থিতি যদি অচিরেই সমাধান না হয়, তবে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হতে পারে।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বললেন, “আল্লাহই তারে বাঁচায় রাখছে।”
তার স্বপ্ন, শেখ হাসিনা যেন জঙ্গি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করে যান।
এই আকাঙ্ক্ষা শুধু রাজনৈতিক সমর্থনের প্রতিফলন নয়, বরং ন্যায়বিচারের পিপাসায় সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির প্রতিধ্বনি।
তার বিশ্লেষণে উঠে আসে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক চালবাজির প্রসঙ্গ।
যদিও তিনি একজন রিকশাচালক, তবু আন্তর্জাতিক কূটনীতির প্রভাব সম্পর্কে তার উপলব্ধি ছিল স্পষ্ট—কিছু লোক বাইরের ইন্ধনে দেশের ক্ষতি করছে, আর সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ ঠিকই সেটা বুঝতে পারছে।
শেষ পর্যন্ত তিনি গভীর দুশ্চিন্তার কথা বললেন: “এখন কী হয় এই দেশে, আমরা এখনও বুঝতে পারতাছি না।”
তার এই শঙ্কা কেবল ব্যক্তিগত আবেগ নয়, বরং তৃণমূল মানুষের ভেতরের অস্থিরতা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আর হারানো আস্থার প্রতিচ্ছবি।
