সাবেক মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের মৃত্যুর আগে হাসপাতালের বেডে হাতকড়া পরা ছবি ঘিরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন নীলা ইসরাফিল। তিনি বললেন, “রাষ্ট্র আজ শেকলবন্দী, মৃত্যুশয্যাতেও মুক্তি নেই।”
সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের মৃত্যুর আগমুহূর্তে হাসপাতালের বেডে হাতকড়া পরা একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
ছবিতে দেখা যায়, হাসপাতালে মৃত্যুপথযাত্রী অবস্থায় সাবেক মন্ত্রীর হাতে হাতকড়া পরানো। এই দৃশ্য অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগিয়েছে—এটা কি আইন, নাকি রাষ্ট্রীয় নিষ্ঠুরতার নগ্ন উদাহরণ?
এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন সাবেক এনসিপি নেত্রী নীলা ইসরাফিল।
আজ মঙ্গলবার ভোরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নীলা লিখেছেন, “আজকের এই ভয়ঙ্কর ছবি, একজন মৃত্যুপথযাত্রী সাবেক মন্ত্রীর হাতে হাতকড়া।
এটাই আমাদের রাষ্ট্রের আসল চেহারা। এখানে মানুষ মরতে মরতেও শেকলবন্দী, এখানে মৃত্যুশয্যাতেও মুক্তি নেই।”
তিনি আরও বলেন, “নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন যিনি ৬ দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন—
তিনি আজ হাসপাতালের বেডেও রাষ্ট্রের শেকল থেকে মুক্তি পাননি। এটা কি বিচার, এটা কি মানবতা?”
এনসিপির সাবেক এ নেত্রী আরও বলেন, “ফাঁসির আসামিকেও মৃত্যুশয্যায় হাতকড়া পরানো মানে মানবিকতাকে গলা টিপে হত্যা করা।
রাষ্ট্র যদি এতটাই নির্মম হয়, তাহলে সেই রাষ্ট্রের উন্নয়ন, সংস্কার—সবই অর্থহীন।”
পোস্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইঙ্গিত করে নীলা ইসরাফিল লেখেন, “আপনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে মানবিকতার বুলি কপচান,
কিন্তু দেশের ভেতরে এই ধরনের অমানবিকতার বিরুদ্ধে নীরব। আপনি কি কেবল বিদেশি ছবি তোলার জন্যই মানবতার মুখোশ পরেন?”
তিনি রাষ্ট্রযন্ত্রের এই আচরণকে ‘ভূতের পায়ে শেকল’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন,
“এই শেকল ভাঙার একমাত্র উপায় হলো একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক নির্বাচন।”
ফেসবুক পোস্টের একদম শেষে নীলা ইসরাফিল দাবি করেন, “উন্নয়ন চাই না, সংস্কার চাই না। আমরা চাই শুধু একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন।
কারণ নির্বাচনই পারে রাষ্ট্রকে মানুষের হাতে ফিরিয়ে দিতে, এই অমানবিকতার চক্র থেকে মুক্তি দিতে।”
এই ঘটনা দেশজুড়ে মানবাধিকার, ন্যায়বিচার এবং মানবিকতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
