খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা ও দিঘিনালা উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ বেড়ে উঠেছে। সেনা মোতায়েন, দোকানপাট লুট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি অনিশ্চিত।
খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা ও দিঘিনালা উপজেলায় সাম্প্রতিককালে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে, যা প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজরদারির মধ্যে রয়েছে।
জেলার সব এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার সেনাবাহিনীর রিজিওন কমান্ডার ও বিজিবি কমান্ডকে সর্বদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ডিসি ও এসপিদেরও একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী,
গুইমারা ও দিঘিনালা উপজেলায় সেনা ও স্থানীয় বাঙালি সম্প্রদায়ের সাথে পাহাড়িদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে সেনাবাহিনীর ১৫+ সদস্য এবং পাহাড়িদের প্রায় ৬০+ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে অনেকেই গুলিবিদ্ধ, তবে এখনও অনেক আহতকে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গুইমারার রামসু বাজারে মারমাদের প্রায় ৩০টি দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদরেও প্রায় ৮০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট হয়েছে।
এছাড়া গুইমারার অন্যান্য এলাকায় বাঙালি ও পাহাড়িদের অনেক ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও লুট হয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনী মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট বন্ধ করেছে, যাতে সংঘর্ষ ও নির্যাতনের তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে না পড়ে।
পাহাড়ি সম্প্রদায়ের একাউন্টগুলিও সাময়িকভাবে ডাউন করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে অতিরিক্ত সেনা সদস্য খাগড়াছড়িতে পৌঁছেছে।
নাইক্ষ্যংছরি ও আলীকদম উপজেলার সীমান্তে বিজিবি সদস্য বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনীকে মোভ করা হয়েছে, যাতে আরাকান আর্মির সম্ভাব্য হুমকি মোকাবেলা করা যায়।
গুইমারা উপজেলার সকল সিভিল সরকারি কর্মচারীদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
খাগড়াছড়িতে এই সহিংসতা শুধু স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব নয়, এটি গভীর সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব তৈরি করতে পারে।
মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ ও তথ্য নিরোধের মাধ্যমে প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও, দীর্ঘমেয়াদে এই ধরনের সংঘাত এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলবে।
স্থানীয় ব্যবসা ও আবাসিক সম্প্রদায়ের উপর এই হামলার অর্থনৈতিক ক্ষতিও ব্যাপক।
পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের এই ধারা রাজনৈতিক, সামাজিক ও নিরাপত্তা দিক থেকে জেলা ও দেশের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরদারির মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
