মামুনুল হকের আফগান সফর বাংলাদেশের জন্য তালেবানি শাসনের নীলনকশার ইঙ্গিত দিচ্ছে। ইউনুস সরকারের মৌলবাদী পৃষ্ঠপোষকতা কিভাবে জাতির মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে, তার বিশদ বিশ্লেষণ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে এসেও মৌলবাদী চক্রের ষড়যন্ত্র থামেনি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যে শক্তিগুলো দেশকে পাকিস্তানি শাসনের অন্ধকারে ঠেলে দিতে চেয়েছিল, তারা আজ নতুন ছদ্মবেশে সক্রিয়। এরই সাম্প্রতিক প্রমাণ হলো হেফাজতের বিতর্কিত নেতা ও খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকের আফগানিস্তান সফর।
মামুনুল হক যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি এনজিওর সহায়তায় আফগানিস্তান সফর করেছেন।
কিন্তু এই সফরকে নিছক সৌজন্য ভ্রমণ বলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে তালেবানি আদলে একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার রূপরেখা সংগ্রহ করা।
আফগানিস্তানের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে মৌলবাদী শক্তি কীভাবে বাংলাদেশে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে পারে, সেটিই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল।
আফগানিস্তানের তালেবানি শাসন মানে নারীকে গৃহবন্দি করা, শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করা, ভিন্নমত দমন করা এবং গণতন্ত্রকে অস্বীকার করা।
বাংলাদেশের মৌলবাদী চক্র একই রকম নীলনকশা কায়েমের স্বপ্ন দেখছে।
মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে ধ্বংস করে নারীর অধিকার ও ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি মুছে দিতে তারা মরিয়া।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো, এই তৎপরতা ঘটছে ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অবৈধ সরকারের নীরব সমর্থনের মধ্যে।
তার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মৌলবাদী চক্র নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কার্যক্রম রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখছে না।
বরং দুর্নীতি, অর্থনৈতিক সংকট ও দমননীতির কারণে সাধারণ মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছে, আর সেই সুযোগ নিচ্ছে মৌলবাদীরা।
জনগণের মনে রাখা জরুরি, যারা আজ তালেবানি শাসনের স্বপ্ন দেখছে, তারাই একসময় পাকিস্তানি হানাদারদের দোসর ছিল।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সেই শক্তিই আজ নতুন রূপে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করছে।
মামুনুল হকের আফগান সফর আসলে সেই আন্তর্জাতিক মৌলবাদী নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনেরই প্রচেষ্টা।
প্রশ্ন হলো—বাংলাদেশ কি আবারো মৌলবাদী শাসনের অন্ধকারে ফিরে যাবে?
উত্তর স্পষ্ট: না।
তাই আজই প্রয়োজন সজাগতা ও ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষকে সংগঠিত হতে হবে।
রাজপথে দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিতে হবে—বাংলাদেশে তালেবানি শাসনের কোনো স্থান নেই, থাকতে দেওয়া হবে না।
