নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের কর্মীদের প্রশিক্ষণের অভিযোগে সেনা কর্মকর্তা মেজর সাদিককে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সেনাবাহিনী। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উদ-দৌলার নেতৃত্বে শুরু হয়েছে তদন্ত।
_মুক্তিবার্তা৭১
ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক গুরুত্বপূর্ণ প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে—নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের কর্মীদের গোপনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগে এক সেনা কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, মেজর সাদিক নামের একজন কর্মকর্তা নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগপন্থী কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন। বিষয়টি সেনা সদর দফতরের নজরে আসার পর তদন্ত শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস ‘এ’-তে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকেরা মেজর সাদিক নামের ওই কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘ওই কর্মকর্তা কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন, এটা ঠিক কি না?’ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বলেন, ‘মেজর সাদিকের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেনাবাহিনীর প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। তাই তদন্তাধীন অবস্থায় এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।’
সেনাবাহিনীর বার্তা?
এ ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে—সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা কী পরিমাণে ঢুকে পড়েছে এবং এটি কতটা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ? বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেক্ষাপটে যেখানে সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষতা বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, সেখানে এমন ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে জনমনে।
অন্যদিকে একই ব্রিফিংয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম, ইউপিডিএফ ও কেএনএফের কার্যক্রম সম্পর্কে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আর্মড গ্রুপগুলোর বেইস ও ট্রেনিং ক্যাম্প ধ্বংস করা হয়েছে এবং কেএনএফ এখন “নাজুক” অবস্থানে রয়েছে।
আরাকান আর্মির কাছ থেকে অস্ত্র পাওয়া নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও পরিস্থিতি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
গোপালগঞ্জে এনসিপি নেতাদের ওপর হামলা ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গোপালগঞ্জের ঘটনা দুঃখজনক।
তবে সে প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনী জীবন রক্ষার জন্যই হস্তক্ষেপ করেছে, কোনো রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে নয়।
রাজনৈতিক পক্ষপাত বনাম রাষ্ট্রীয় নিরপেক্ষতা
নিষিদ্ধ দলীয় কর্মীদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে একটি রাষ্টীয় ষড়যন্ত্রের অংশ ছাড়া কিছুই নয় বলে সচেতন নাগরিকরা মনে করে।
যদি সত্যি হয়, তাহলে সেটি সামরিক বাহিনীর ওপর একটি বড় আঘাত।
বর্তমানে সেনাবাহিনীর একজন চৌকস ও সম্মানিত অফিসারকে ঘিরে যে অপপ্রচার ছড়ানো হচ্ছে, তা আসলে সেই চিহ্নিত আন্তর্জাতিক চক্রান্তের অংশ, যার ছায়া আজও বাংলাদেশে জঙ্গি-তন্ত্রের রাজনীতিতে ঘাপটি মেরে আছে।এই পুরো প্রপাগাণ্ডা পরিচালিত হচ্ছে সেই অবৈধ দখলদার, দেউলিয়া “নোবেল বণিক” ইউনূসের আরেকটি সুপরিকল্পিত ও মেটিকুলাস নকশা থেকে — যার লক্ষ্য দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে বিব্রত করা, এবং জনগণের আস্থা নষ্ট করা।
আমরা বলি স্পষ্ট করে — রাষ্ট্র, সরকার এবং জনগণের বিরুদ্ধে এইসব অপপ্রচারের দাঁতভাঙা জবাব আসবে গণতন্ত্রের শক্তিতে, বাঙালির ঐক্যে।
একইসঙ্গে এটি ইঙ্গিত দেয় যে সেনাবাহিনীর কিছু অংশ হয়তো সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক খেলায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
এই প্রবণতা ভবিষ্যতের গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য বড় হুমকি হতে পারে।
