 
                  ১৯৬৯ ও ১৯৭৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বিনিময়ে সহায়তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে তিনি প্রমাণ করেন, একজন সত্যিকারের নেতা জাতির আত্মমর্যাদার সঙ্গে আপস করেন না—এমনকি দুর্ভিক্ষের মাঝেও নয়।
—–জি. ইসলাম——–
ঢাকা, ৩০ এপ্রিল ২০২৫; ১৯৬৯ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এক প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সহযোগিতার বিনিময়ে বঙ্গোপসাগরের একটি দ্বীপ (সম্ভবত সেন্ট মার্টিন) তাদের কাছে ছেড়ে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু সেই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন।
এরপর ১৯৭৪ সালে, যখন বাংলাদেশ ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড বঙ্গবন্ধুএর সঙ্গে বৈঠক করেন। সে সময় মার্কিন পক্ষ থেকে আবারও অনুরূপ প্রস্তাব দেওয়া হয় বাংলাদেশকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে, তবে এর বিনিময়ে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ যুক্তরাষ্ট্রের নৌঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদের ভাষ্য অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে উত্তেজিত কণ্ঠে বলেন:
“আমার দেশের মানুষ না খেয়ে মরবে, তবু আমি দেশ বিক্রি করব না!”
এই দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ ও আদর্শের জন্যই বঙ্গবন্ধু আজও ইতিহাসের মহানায়ক। কিন্তু এর পরিণতিতে বাংলাদেশকে মার্কিন খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত হতে হয়, যার ফলে দুর্ভিক্ষ আরও তীব্র হয়। অনেক মানুষ প্রাণ হারান।
তবু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় একজন সত্যিকারের নেতা কখনোই জাতির সার্বভৌমত্বের সাথে আপস করেন না। বঙ্গবন্ধু সেই চিরন্তন প্রতিচ্ছবি, যিনি ক্ষুধার সামনে মাথা নত না করে আত্মমর্যাদা রক্ষা করেছিলেন।

 
                         
         
         
        