বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে ফিরছেন ৫ মে, কিন্তু রাজকীয় এয়ার এম্বুলেন্স বাতিলের পেছনে ড. ইউনূসের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে ফিরতে হচ্ছে সাধারণ বিমানে।
প্রকাশিত: ৩ মে ২০২৫;
দীর্ঘ প্রায় তিন মাস লন্ডনে চিকিৎসার পর দেশে ফিরছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আগামী ৫ মে দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার। তবে ফেরার পথে তিনি এয়ার এম্বুলেন্স পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়েই কম সুবিধা সম্পন্ন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সাধারণ বিমানেই ফিরতে হচ্ছে তাকে।
এয়ার এম্বুলেন্স না পাওয়ার পেছনে বর্তমানে বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড মুহাম্মদ ইউনূস কলকাঠি নেড়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গমনকালে কাতার সরকার একটি ব্যতিক্রমী ও কূটনৈতিক সৌজন্যমূলক পদক্ষেপ হিসেবে বেগম খালেদা জিয়াকে রাজকীয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছিল।
মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ করে কাতার রাজপরিবারের সঙ্গে জিয়া পরিবারের দীর্ঘদিনের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের প্রতিফলন হিসেবে অনেকেই এই পদক্ষেপকে দেখেছেন।
তবে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ফেরার সময়ের জন্য নির্ধারিত ওই এয়ার এম্বুলেন্স ব্যবস্থাটি পরিকল্পিতভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন ড. ইউনূস। সূত্রগুলো বলছে, বেগম জিয়ার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্মান এবং রাজনৈতিক বার্তার সম্ভাব্য গুরুত্বকে কেন্দ্র করে বিরক্ত হয়ে ইউনূস নেপথ্যে থেকে প্রভাব খাটিয়ে এ ব্যবস্থাটি বন্ধ করান।
“এটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত কাজ,” বলেন বিএনপির একজন যুগ্ন মহাসচিব, যিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। “ড. ইউনূস বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলে তাঁর ব্যক্তিগত যোগাযোগ ব্যবহার করে কাতার এয়ারলাইন্সের বিশেষ এয়ার এম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার ফেরাটা ঠেকিয়েছেন।
কী কারণে এমনটা ঘটিয়েছে, তা স্পষ্ট না। তবে জানা গেছে, বেগম জিয়া আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব পাচ্ছেন, বিষয়টা ইউনূস ঘনিষ্ঠরা স্বাভাবিকভাবে নিচ্ছিলেন না। অন্যদিকে, নতুন গঠিত রাজনৈতিক দল- এনসিপি নেতারাও চাচ্ছিলেন না।
এটা এমন সময়ে ঘটলো, যখন আন্তর্জাতিকভাবে মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশের আগামী দিনের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের প্রধান ব্যক্তিত্ব হিসেবে উঠে আসছেন খালেদা জিয়া। এ কারণে বেশ গুরুত্বও পাচ্ছেন তিনি। যার অংশ হিসেবেই কাতার রাজপরিবার বিশেষ এয়ার এম্বুলেন্স ব্যবস্থা পাঠিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার জন্য।”
বিএনপির ওই শীর্ষ নেতার দাবি, এটি ছিল “খুবই নিম্নমানের” উদাহরণ, এবং ইউনূস এই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন রাজনৈতিক হীনমন্যতা থেকে। একজন অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে এয়ার এম্বুলেন্সও দিতে চাননি তিনি।
“তিনি সবসময় নিজেকে দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক মুখ হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছেন,” বলেন অপর এক বিএনপি নেতা, যিনি সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। “কিন্তু যখন অন্য কেউ—বিশেষ করে প্রতিপক্ষ—আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান, তখন তিনি ঈর্ষান্বিত হয়ে পদক্ষেপ নেন।”
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন তাঁরই দুই পুত্রবধূ তারেক রহমানের সহধর্মিণী চিকিৎসক জুবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান।
দুই পুত্রবধূ ছাড়াও সফরসঙ্গী থাকবেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমিনুল হক চৌধুরী, এপিএস মাসুদুর রহমান ও দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম ও রূপা হক।
সূত্রঃ ব্রিকলেন নিউজ https://bricklanenews.com/?p=6955
