 
                  মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার পালাকান্দি চা বাগানের শতবর্ষী কালীমন্দিরে হামলা চালিয়ে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। রাষ্ট্র কি সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ?
৯ মে, ২০২৫:
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ৯ নম্বর টিলাগাঁও ইউনিয়নের পালাকান্দি চা বাগানে অবস্থিত শতবর্ষী কালীমন্দিরে নৃশংস হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার সকালে পূজার সময় ভক্তরা দেখতে পান—মন্দিরে কালীমূর্তির মাথা ও দুই হাত চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার পরপরই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এই মন্দিরটি শুধু ধর্মীয় উপাসনার স্থান নয়, বরং চা-শ্রমিক হিন্দু সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক। মন্দিরকে কেন্দ্র করেই প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব, যা এই সমাজের ঐতিহ্যের অংশ।
রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা?
প্রশ্ন উঠছে—রাষ্ট্র কবে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করবে?
বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের হামলা চলতে থাকলেও হামলাকারীরা প্রায়শই থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনকি অনেক ক্ষেত্রেই ন্যূনতম তদন্ত পর্যন্ত হয় না, বা তদন্ত হয় ‘প্রতীকী’ মাত্র।
এই পরিস্থিতিতে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—এটাই কি সেই বাংলাদেশ, যার সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতার গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে?
কারা জবাব দেবে?
এখনো পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসন বা পুলিশের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার বা সনাক্ত করার কোনো অগ্রগতি জানা যায়নি। এ ঘটনায় রাষ্ট্র যদি নীরব থাকে, তবে তা শুধু সংখ্যালঘুদের জন্য নয়—পুরো জাতির জন্যই একটি বিপজ্জনক বার্তা বহন করে।
প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ডাক
এখনই না জেগে উঠলে, একের পর এক মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা—সবই টার্গেটে পরিণত হবে। হিন্দু চা-শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত, আর তাদের ধর্মীয় কেন্দ্রেও হামলা হলে তা নিছক হামলা নয়—এটি একটি পরিকল্পিত নিঃস্বীকরণ (erasure)।
সামাজিকভাবে প্রতিবাদ, আইনি চাপ, এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনের নজরদারিই পারে এই হামলাগুলোকে থামাতে।
প্রতিবাদ করুন, সোচ্চার হোন—এখনই।

 
                         
         
         
        