জাপানের টোকিওতে ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে কালো পতাকা প্রদর্শন ও বিক্ষোভ করেছে আওয়ামী লীগ ও প্রবাসী বাঙালিরা। উত্তপ্ত স্লোগান ও বক্তব্যে উঠে এসেছে রাজনৈতিক ক্ষোভ।
প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের জাপান সফরের প্রতিবাদে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে শুক্রবার (২৯ মে) বিক্ষোভ ও কালো পতাকা প্রদর্শন করেছে আওয়ামী লীগ ও জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালি কমিউনিটি।
জাপানে ইউনুসবিরোধী বিক্ষোভ:
বিক্ষোভকারীরা ‘গো ব্যাক ইউনুস’, ‘স্টেপ ডাউন ইউনুস’, ‘ইউনুস তুই রাজাকার’, ‘ইউনুসের চামড়া তুলে নেব আমরা’—এই ধরনের উগ্র ও তীব্র প্রতিবাদী স্লোগান দিতে থাকেন। মিছিল ও প্ল্যাকার্ডে ইউনুসবিরোধী বার্তা ছাড়াও দলীয় স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো এলাকা। শ্লোগানগুলোর ভাষা ও টোনে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও বিদ্বেষ প্রকটভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
উপস্থিতি ও সংগঠন:
জাপানে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করেও বিক্ষোভে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। জাপান আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে সক্রিয় ছিলেন।
বক্তব্য ও অভিযোগ:
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন সাবেক সভাপতি ছালেহ মোঃ আরিফ, মাজহারুল ইসলাম মাসুম, নাজমুল হাসান রতন, বশির আহমেদ, এস এম হাসান, বি এম শাহজাহান, শাহ আলম, নেওয়াজ শরীফ, হারুনুর রশীদ, লাইজু প্রমুখ।
বিশেষভাবে জাপান আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাজী মাহফুজুল হক লাল জাপানি ভাষায় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ইউনুসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের সময়ে বাংলাদেশে ব্যাপক পুলিশ হত্যা, দমন-পীড়ন ও সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়েছে।
ইউনুসের উপস্থিতি:
প্রতিবাদ মিছিল ও সভা বিকেল ৪টায় শুরু হলেও ধারণা করা হচ্ছে, ইউনুস নির্ধারিত সময়ের চেয়ে পরে এসে বিক্ষোভকারীদের এড়াতে চেষ্টা করেন। বিকেল ৫টায় বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ:
এই বিক্ষোভ শুধু ইউনুসবিরোধী নয়, বরং এটি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতিফলন। ড. ইউনুসের ওপর আওয়ামী লীগের ক্ষোভ তার নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে ভূমিকা ও বিদেশি সংলাপকেন্দ্রিক কূটনৈতিক তৎপরতার ফলাফল। রাজনীতিতে তাকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ স্পষ্টভাবে বার্তা দিচ্ছে—যদি তিনি নিরপেক্ষ না থাকেন, তবে তাকে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে।
এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে, দেশের রাজনৈতিক টানাপড়েন শুধু অভ্যন্তরীণ নয়, তা এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও প্রভাব ফেলছে। বিক্ষোভে উগ্র শ্লোগান ও হুমকির মতো বক্তব্য রাজনৈতিক বিভক্তির গভীরতা প্রকাশ করেছে।
