 
                  শিল্প সচিব ওবায়দুর রহমানের অতীত ছাত্রদল সংশ্লিষ্টতা এবং মাগুরায় বিএনপি ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসীদের পুনরুত্থানের অভিযোগ ঘিরে উঠেছে বড় প্রশ্ন—রাষ্ট্রযন্ত্র কি এখন চরমপন্থীদের কবলে?
বর্তমান শিল্প সচিব মোঃ ওবায়দুর রহমানের জীবনের রাজনৈতিক শেকড় ঘিরে বর্তমানে বিস্তর আলোচনা। ছাত্রজীবনে তিনি ছিলেন মাগুরা জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক। সে সময়ের বিএনপি সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) এম মজিদ-উল-হকের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে (বিসিএস) সুপারিশপ্রাপ্ত হন। তবে এটাই কি তার প্রশাসনিক উত্থানের শেষ ব্যাখ্যা?
নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে যখন তিনি মাগুরা মেডিকেল কলেজ স্থাপন প্রকল্প পরিদর্শনে গিয়ে প্রকাশ্যে পাশে রাখলেন দুই বিতর্কিত চরিত্রকে—মাগুরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক পিকুল খান এবং তার ভাই মোঃ ফরিদ হাসান খান, যিনি কিছুদিন আগেই অস্ত্র ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে বিপুল অবৈধ অস্ত্রসহ ধরা পড়েছিলেন।
প্রশাসনের একজন সচিব যদি প্রকাশ্যে এমন বিতর্কিত ও অভিযোগপ্রাপ্ত সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেন, তাহলে রাষ্ট্র কি মৌন সমর্থন দিচ্ছে উগ্রবাদীদের?
ফরিদ হাসান খানের বিরুদ্ধে অস্ত্র, চাঁদাবাজি, খুন এবং গুমের একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনিক পর্যায়ে তার এভাবে পুনরাবির্ভাব প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে।
এই ধরনের সহযোগিতা কি কেবল ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে, নাকি এর পেছনে রয়েছে কোনো সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক চক্রান্ত?
এখানে প্রশ্ন উঠছে—বিএনপি-জামায়াত চক্র কি এখনো প্রশাসনে প্রোএক্টিভভাবে ঢুকে আছে? বর্তমান সরকারের উন্নয়নমুখী ভাবমূর্তি এবং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতার প্রতিশ্রুতি কি এইসব গোপন পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার কাছে হুমকিতে পড়ছে না?
শুধু ব্যক্তি ওবায়দুর রহমান নয়, বরং এর মাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে সামগ্রিক প্রশাসনিক নিয়োগ ও নজরদারি ব্যবস্থা। রাষ্ট্রযন্ত্র যদি নিজেই পূর্ব রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টদের দ্বারা আক্রান্ত হয়, তাহলে সাধারণ জনগণ কোথায় যাবে?
ফরিদ হাসান খানের মতো অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়ার অর্থ হচ্ছে আইনের শাসনকে তামাশায় পরিণত করা। প্রশাসন ও রাজনীতির এই অশুভ মেলবন্ধন একটি অন্ধকার ভবিষ্যতের পূর্বাভাস দিচ্ছে।
প্রশ্ন হলো—কীভাবে একজন শীর্ষ পর্যায়ের সচিব এত বড় রাজনৈতিক পক্ষপাতের প্রমাণ রেখে দায়িত্বে বহাল থাকেন?
এই ঘটনাগুলো যদি বিচ্ছিন্ন বলে চালিয়ে দেয়া হয়, তবে আমরা হয়তো সত্যকে আড়াল করবো, কিন্তু সমস্যার মূল থেকে কখনোই মুক্তি পাবো না। প্রশাসনে প্রো-বিএনপি ও উগ্রপন্থী ব্যক্তিদের ঢুকে পড়া এখন কেবল তত্ত্ব নয়, বাস্তবতা। রাষ্ট্রযন্ত্র ও সচেতন নাগরিক সমাজকে এখনই প্রশ্ন তুলতে হবে

 
                         
         
         
         
         
        