সংকটের মধ্যেও যাঁরা রোজ পেট চালাতে ঘাম ঝরাচ্ছেন—সেই খেটে খাওয়া মানুষরাই এখনো শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। এঁরাই আওয়ামী লীগের আসল শক্তি ও অনুপ্রেরণার আধার।
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২৫;
বাংলাদেশে রাজনীতি যেমন বহুমাত্রিক, তেমনি এর ভিত্তিও বহুলাংশে আবেগপ্রবণ এবং বাস্তবতানির্ভর। এই দেশের রাজনীতির প্রধান চালিকাশক্তি কোনো একক গোষ্ঠী নয়—এটা কখনোই শুধু উচ্চবিত্ত, শিক্ষিত, শহুরে বা মিডিয়াকেন্দ্রিক শ্রেণির আওতায় সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং বাংলাদেশের প্রকৃত রাজনৈতিক শক্তি নিহিত রয়েছে গ্রামবাংলার খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে, যাঁরা প্রতিদিন অমানুষিক পরিশ্রম করেও মনেপ্রাণে দেশপ্রেমিক, এবং শেখ হাসিনার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা পোষণ করেন।
https://web.facebook.com/share/v/19QoR3ZhFG
১. খেটে খাওয়া মানুষের বাস্তব জীবন ও সংগ্রাম:
বাংলাদেশের অর্থনীতির পেছনের প্রকৃত কারিগর হলো শ্রমজীবী জনগণ। রিকশাচালক, দিনমজুর, কৃষক, গার্মেন্টস কর্মী, নির্মাণশ্রমিক, সবজি বিক্রেতা কিংবা বাসের হেলপার—তাঁদের প্রতিদিনের ঘামেই গড়ে উঠেছে এই দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি।
এঁরা রাজনীতি বোঝেন না শাস্ত্রের ভাষায়, এঁরা বোঝেন জীবনের বাস্তবতা। তাই যখন শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ১০ টাকা কেজি চাল পান, সরকারি ভাতা পান, ভ্যাকসিন পান, চিকিৎসা সহায়তা পান—তখন এই মানুষগুলোর মধ্যে এক ধরনের কৃতজ্ঞতা গড়ে ওঠে।
২. রাজনীতির তত্ত্ব বনাম মাটির মানুষ:
বর্তমান বাংলাদেশে একটি বড় অংশের শিক্ষিত শ্রেণি রাজনীতিকে মূল্যায়ন করেন তথ্য, তত্ত্ব এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের মাধ্যমে।
কিন্তু মাটির মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে মূল্যায়ন করেন নিজের জীবন থেকে।
তাঁরা বলেন—”শেখ হাসিনার সময়ে আমরা খাইতে পারি।” এই বাক্যটি শুধু আবেগ নয়, এটা এক ধরনের বাস্তবজ্ঞান যা কোনো থিওরিতে লেখা থাকে না, কিন্তু গভীর প্রভাব রাখে রাজনীতিতে।
৩. অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা ও সামাজিক বিভ্রান্তি:
বর্তমানে দেশ-বিদেশের মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি সংঘবদ্ধ অপচেষ্টা চলছে শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি ধ্বংস করার জন্য।
কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই প্রোপাগান্ডা যতোই প্রবল হোক না কেন, খেটে খাওয়া মানুষের ভরসা নড়েনি।
তাঁরা জানেন, শেখ হাসিনার শাসনে অন্তত তারা অনাহারে মরেন না, ন্যূনতম চিকিৎসা পান, সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে পারেন।
৪. সংকটের সময়ে শেখ হাসিনার ভূমিকা:
করোনা মহামারীর সময় সরকার যেভাবে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালিয়েছে, তা উন্নত অনেক দেশকেও বিস্মিত করেছে। তখনকার দিনমজুর, রিকশাচালক, ফেরিওয়ালা সবাই বিনামূল্যে টিকা পেয়েছেন।
এর পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় অসংখ্য পরিবারকে নগদ অর্থ, চাল, ডাল সরবরাহ করা হয়েছে।
এই অভিজ্ঞতা সাধারণ মানুষের মনে একটি শক্তিশালী বিশ্বাসের ভিত্তি তৈরি করে দেয় যে—এই নেত্রী কষ্টের সময় তাঁদের পাশে থাকেন।
৫. আওয়ামী লীগের প্রকৃত শক্তি:
রাজনীতিতে অনেকেই মনে করেন যে আওয়ামী লীগ শহরের মধ্যবিত্ত বা রাজনৈতিক এলিটদের দল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আওয়ামী লীগের প্রকৃত ভিত্তি হলো গ্রামীণ কৃষক, মজুর, শ্রমিক শ্রেণি।
এই শ্রেণির মানুষ নিজেরা কোনোদিন র্যালিতে নামেন না, কিন্তু ভোটের সময় তাঁদের চুপচাপ উপস্থিতিই নির্ধারণ করে দেয় কে জিতবে।
শেখ হাসিনা এই ভোটারদের হৃদয়ে এমনভাবে স্থান করে নিয়েছেন যা কোনো পোস্টার, ব্যানার বা মিডিয়া প্রচারণা দিতে পারে না।
৬. চরম প্রতিকূল সময়ে আওয়ামী লীগের পাশে থাকা:
যখন দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক চাপ, বৈশ্বিক মন্দা—সব মিলে চরম এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তখনও এদের মধ্যে অনেকেই আওয়ামী লীগের পতাকা ছাড়েননি।
কারণ তারা জানেন—এই সরকার যদি থাকে, তাহলে অন্তত মাথার উপর ছাদ থাকবে, পেটের ভাত থাকবে।
বিপরীতে, যারা রাজপথে হট্টগোল করছে, তাদের হাতে গেলে আবার অরাজকতা, জ্বালাও-পোড়াও ফিরে আসবে।
৭. সামাজিক প্রতিরোধ ও প্রমাণিত সচেতনতা:
বর্তমানে নানা ধরণের অপ্রচার ও মিথ্যাচার চালানো হচ্ছে ফেসবুক, ইউটিউব, এমনকি তথাকথিত ফ্যাক্টচেকিং সাইটগুলোর মাধ্যমে।
কিন্তু এক মজার বিষয় হলো, অনেক সময় দেখা যায় গ্রামের কৃষকই এসব বিভ্রান্তিকর কনটেন্টকে প্রত্যাখ্যান করছেন।
তাঁরা বলছেন—”ওসব বলে কী হবে? আমরাতো নিজের চোখে দেখছি কার কী কাজ।”
এটাই শেখ হাসিনার জন্য সবচেয়ে বড় আশীর্বাদ—মানুষ তাকে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বিচার করে, মিডিয়া থেকে নয়।
৮. বিরোধীদলের ব্যর্থতা ও জনবিচ্ছিন্নতা:
অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। তাঁদের বক্তৃতা যতই জ্বালাময়ী হোক, বাস্তব জীবনে তাঁদের কোনো সাহায্য, পরিকল্পনা বা সহানুভূতি খেটে খাওয়া মানুষ পায় না।
ফলে, আওয়ামী লীগ যতই সমালোচনার মুখে পড়ুক, সাধারণ মানুষের আস্থা তাদের দিকেই থেকে যায়।
৯. আওয়ামী লীগ ও খেটে খাওয়া মানুষের সম্পর্ক ভবিষ্যতের জন্য কী বার্তা দেয়:
এটি একটি রাজনৈতিক বাস্তবতা যে একটি দলের টিকে থাকার জন্য শুধু শহুরে বুদ্ধিজীবী সমর্থন যথেষ্ট নয়।
যদি একটি সরকার গ্রামীন ও শ্রমজীবী মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে, তবে সে সরকারই টিকে থাকে।
আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থান তার প্রমাণ। শেখ হাসিনা দীর্ঘমেয়াদে এই জনসম্পৃক্ততা গড়ে তুলেছেন এবং সেটিই তাঁকে সকল অপপ্রচার ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ক্ষমতায় রেখেছে।
১০. উপসংহার:
শেখ হাসিনার প্রতি খেটে খাওয়া মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা শুধু রাজনৈতিক সমর্থন নয়, এটি একটি সামাজিক চুক্তির মতো।
একদিকে সরকার তাঁদের ন্যূনতম অধিকার নিশ্চিত করছে, অন্যদিকে তাঁরা নিজেদের বিশ্বাস, কৃতজ্ঞতা এবং ভোট দিয়ে সরকারের প্রতি তাঁদের দায়িত্ব পালন করছে।
এই সম্পর্ক রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের কাছে হয়তো অবোধ্য, কিন্তু এটাই আওয়ামী লীগের আসল ভিত্তি।
আজ যাঁরা দেশে-বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে নানা থিওরি ছড়াচ্ছেন, তাঁদের বোঝা উচিত—একজন দিনমজুরের অনুভব, একটি বিধবার প্রাপ্তি,
অথবা একটি কৃষক পরিবারের সন্তানের শিক্ষার সুযোগ—এই অভিজ্ঞতাগুলোই রাজনীতির আসল ব্যালট বক্স।
এই মানুষগুলোই আওয়ামী লীগের অকৃত্রিম কণ্ঠস্বর। এঁরাই হচ্ছেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার শ্বাশত অনুপ্রেরণা।
