 
                  ইউনুস সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান কিভাবে আমেরিকায় অবস্থান করে বাণিজ্য চুক্তির সমন্বয় করছেন এবং বাংলাদেশের জাহাজ ক্রয়ে অস্বাভাবিক ব্যয় ঘটাচ্ছেন—এই বিশ্লেষণে তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থের অন্ধকার দিক উন্মোচিত হয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জনাব খলিলুর রহমানের কার্যক্রম এখন বড় প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। নিরাপত্তা উপদেষ্টা হওয়া সত্ত্বেও তিনি কেন বাণিজ্য চুক্তির সমন্বয়ক হয়ে উঠেছেন এবং কেন আমেরিকায় অবস্থান করছেন—এ প্রশ্ন উঠছে জনমনে।
আমাদের নিরাপত্তা নীতির শীর্ষ পদে থেকে প্রায় এক মাস ধরে বিদেশে অবস্থান শুধু কূটনৈতিক প্রটোকলের দিক থেকেই নয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও বড় ধরনের অস্বাভাবিকতা।
কিন্তু এই অস্বাভাবিকতাই এখন ইউনুস সরকারের স্বাভাবিক রুটিন হয়ে গেছে।
গত ১২ আগস্ট বাংলাদেশ সরকার ৯৩৫ কোটি ৭১ লাখ ৫৬ হাজার টাকার দুটি ক্যারিয়ার জাহাজ ক্রয় করেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
কিন্তু মজার বিষয়—শিপবিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রিতে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ পাঁচের মধ্যে নেই।
বিশ্বে জাহাজ নির্মাণে আধিপত্য ধরে রেখেছে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও ফিলিপাইন।
তাহলে প্রশ্ন জাগে—বাড়ির কাছেই যদি বিশ্বসেরা জাহাজ নির্মাতা থাকে, তবে কেন সমুদ্র পেরিয়ে আটলান্টিকের ওপারে যাওয়া হলো?
তদন্তে জানা গেছে, যে দুটি জাহাজ কেনা হচ্ছে তা আসলে চীনের শিপইয়ার্ডে নির্মিত।
কিন্তু ক্রয় চুক্তি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মাধ্যমে।
এই মধ্যবর্তী প্রক্রিয়া শুধু অস্বচ্ছই নয়, বরং ব্যয়ের দিক থেকেও অযৌক্তিক।
যদি সরাসরি চীন, দক্ষিণ কোরিয়া বা জাপান থেকে ক্রয় করা হতো, তবে অন্তত ৩০০ কোটি টাকা সাশ্রয় সম্ভব ছিল।
কিন্তু সাশ্রয় নয়, বরং “দালালী কমিশন” যেনই ছিল মূল লক্ষ্য।
এত বড় অর্থনৈতিক অস্বচ্ছতা, সরাসরি কমিশন ব্যবসা এবং বিদেশি স্বার্থসংশ্লিষ্ট লেনদেনের পরও দেশের তথাকথিত সুশীল সমাজ চুপ।
তারা ডলার ও টাকার বিনিময়ে এমন নীরবতা পালন করছে, যা প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্বের জন্য বিপজ্জনক।
জনগণ এখন বুঝে গেছে—যারা বুদ্ধিবৃত্তিক পলিসির নামে মতামত দেন, তাদের অনেকেই পেইড ভোকাল কর্ড।
আমেরিকার ইউএসটিআর (United States Trade Representative)-এর কাছে বর্তমানে খলিলুর রহমান “বিগ কাস্টমার”।
অর্থাৎ, বাণিজ্যিক স্বার্থে তিনি আমেরিকার জন্য এক প্রভাবশালী ক্রেতা ও সমন্বয়কারী।
কিন্তু একইসাথে তিনি বাংলাদেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা—এ এক ভয়ংকর দ্বৈত ভূমিকা, যেখানে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক স্বার্থ মিশে গেছে।
ইউনুস সরকারের এই নীতি ও লেনদেন প্রমাণ করে—রাষ্ট্র পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি এখন অতীত।
একটি দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা যখন বিদেশে থেকে বাণিজ্য চুক্তি করেন, তখন তা শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিকভাবেও দেশের জন্য মারাত্মক সংকেত বহন করে।
এই ধরনের সিদ্ধান্তের পেছনে কার স্বার্থ—দেশের না ব্যক্তির—তা খুঁজে বের করা এখন জাতীয় দায়িত্ব।

 
                         
         
         
        