 
                  চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সংঘর্ষে উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলা, ধাওয়া ও অভিযোগ রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের গভীর সংকেত দিচ্ছে।
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে ছাত্রশিবির ও জামায়াতের এক বৈঠকে বিএনপির ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
সংঘর্ষের শুরু
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল ৫টার দিকে পশ্চিম বাঁশখালী দারুল ইসলাহ দাখিল মাদরাসা মসজিদে ছাত্রশিবিরের একটি বৈঠক চলাকালে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সেখানে হামলা চালায়। এতে জামায়াত-শিবিরের অন্তত তিনজন আহত হন। পরে রাত ১১টা পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা চলে।
আহতদের পরিচয়
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক নয়নমণি, ছাত্রদলকর্মী মো. তায়েব, এনামুল হক ও তানভীর হাসান।
অন্যদিকে জামায়াত-শিবিরের মধ্যে আহত হয়েছেন আজগর হোসাইন (ছাত্রশিবির বাঁশখালী উত্তর শাখার সেক্রেটারি), জামায়াতকর্মী মো. রাকিবসহ আরও কয়েকজন।
গুরুতর আহত রাকিবকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
দুই দলের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লোকমান আহমদ দাবি করেন, ছাত্রশিবিরের বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করায় ছাত্রদল প্রতিবাদ জানায়।
এর জেরেই সংঘর্ষ হয় এবং জামায়াত-শিবিরের হামলায় বিএনপির চার থেকে পাঁচজন কর্মী আহত হন।
অন্যদিকে বাহারছড়া ইউনিয়ন জামায়াতের আমির হাসান আজাদ বলেন, “ছাত্রশিবির মসজিদে কোরআন ক্লাসের আয়োজন করেছিল।
সেখানে ছাত্রদল হামলা চালিয়ে আমাদের রাকিবসহ কয়েকজনকে আহত করে। রাতে বিষয়টি মীমাংসা করতে গেলে আবারও আমাদের ওপর হামলা হয়।”
পুলিশের ভূমিকা
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, “বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকা শান্ত আছে।”
বিশ্লেষণ
এই সংঘর্ষ কেবল একটি স্থানীয় ঘটনা নয়; বরং বিএনপি ও জামায়াতের ভেতরকার অবিশ্বাস ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বকে সামনে নিয়ে এসেছে।
একদিকে তারা ঐক্যের কথা বললেও মাঠপর্যায়ে সংঘর্ষ প্রমাণ করছে—দুই দলের রাজনৈতিক এজেন্ডা ও কৌশলে গভীর ফাটল রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভবিষ্যতে জাতীয় রাজনীতিতেও এই দ্বন্দ্ব বিরোধী শিবিরকে দুর্বল করে তুলতে পারে।

 
                         
         
         
        