নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে কারখানা বন্ধ ও শ্রমিক ছাঁটাইয়ের জেরে সংঘর্ষে নিহত এক তরুণ শ্রমিক। এ ঘটনায় শ্রমিক অধিকার, রাষ্ট্রের ভূমিকা ও শিল্পনীতির সংকট স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
নীলফামারীর উত্তরা এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (ইপিজেড) কারখানা বন্ধ ও শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিকের নাম হাবিবুর রহমান (২০)।
তিনি ইকু ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি নিটিং কারখানায় কাজ করতেন।
তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের কাজীরহাট গ্রামে।
নিহতের ভাই আশিকুর রহমান জানান, রাতের শিফটে কাজ শেষে সকালে ইপিজেড থেকে বের হওয়ার সময় হাবিবুর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
শ্রমিকদের অভিযোগ, সম্প্রতি এভারগ্রিন নামের একটি কারখানা থেকে ৫১ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়।
এরই মধ্যে আজ সকালে ওই কারখানার মূল ফটকে নোটিশ টানিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং বেতন–ভাতা বকেয়া রাখা হয়।
এ নিয়ে শ্রমিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে ইপিজেডের সামনে অবস্থান নিলে নীলফামারী–সৈয়দপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী শ্রমিকদের সরাতে গেলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
এ সময় হাবিবুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
আহত অন্তত ১০ জনকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
হাসপাতালে ভর্তি ছয়জনের নাম পাওয়া গেছে—মোমিনুর রহমান (২৫), মো. শাহিন (২৬), নুর আলম (৩০), মোস্তাক আহমেদ (২৫), লিপি আক্তার (২৬) ও জমিলা খাতুন (৩৫)।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফারহান তানভিরুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে আটটার দিকে হাবিবুরকে মৃত অবস্থায় আনা হয়।
ময়নাতদন্তের পর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে বলে তিনি জানান।
এ ঘটনায় উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল জব্বারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
তবে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম আর সাঈদ বলেন, “আমরা এখনও সড়কে আছি।
একজন মারা যাওয়ার খবর শুনেছি, তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করতে পারছি না।”
