 
                  হিজবুত তাহরীরের সক্রিয় জঙ্গি সদস্য আবু রাফসু প্রকাশ্যে সনাতনী হিন্দুদের হত্যার হুমকি দিলেও প্রশাসন ও ইউনুস সরকার নীরব। এই নীরবতা কি জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছে?
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংসে উগ্রবাদী মৌলবাদী জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এ সংগঠনের সক্রিয় জঙ্গি সদস্য আবু রাফসু, যাকে ইতোমধ্যেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে, তার ভেরিফাইড ফেসবুক একাউন্ট থেকে প্রকাশ্যে সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হত্যার উস্কানি দিচ্ছে।
তার সাম্প্রতিক পোস্টে তিনি “হিন্দু হত্যা করে মাতাল হতে চাই” সহ বিভিন্ন হুমকিমূলক বক্তব্য প্রকাশ করেছেন।
শুধু তাই নয়, তিনি একটি “খোলা চিঠি” আকারে পুরো সনাতনী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।
এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য ভয়াবহ এক বার্তা, যেখানে ধর্মীয় সহিংসতা ছড়িয়ে দিয়ে জাতিকে নতুন করে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র চলছে।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, এত বড় একটি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রকাশ্যে ঘটলেও বাংলাদেশের প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেয়নি।
এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এই সন্ত্রাসীর সহাবস্থানকে প্রশ্রয় দিচ্ছে বলেই সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্দেহ জেগেছে।
যখন কোনো সাধারণ মানুষ সামাজিক মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করেন, তখনই তাকে গ্রেফতার বা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়।
অথচ প্রকাশ্য হত্যার হুমকি দেওয়া একজন জঙ্গি সদস্যের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই—এটি নিঃসন্দেহে দ্বিচারিতা ও রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার স্পষ্ট প্রমাণ।
বর্তমান দখলদার অবৈধ সুদারু ইউনুস সরকারও এ ঘটনায় কোনো প্রতিবাদ বা নিন্দা জানায়নি।
সরকারের পক্ষ থেকে এমনকি একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিও আসেনি।
ফলে প্রশ্ন উঠছে—এই নীরবতা কি জঙ্গিবাদকে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রশ্রয় দেওয়ার কৌশল?
বিশ্লেষকদের মতে, ইউনুস সরকারের নীরবতা আসলে দুটি সম্ভাবনা নির্দেশ করে—
তারা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে অক্ষম।
অথবা তারা রাজনৈতিক কারণে জঙ্গিবাদকে গোপনে প্রশ্রয় দিচ্ছে।
যে কারণই হোক না কেন, এর ফল ভোগ করবে সাধারণ মানুষ ও বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়।
হিজবুত তাহরীর মূলত পাকিস্তানি উত্তরসূরী রাষ্ট্রবিরোধী একটি সংগঠন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অস্বীকার করে।
তাদের লক্ষ্য হলো সাম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টি করে দেশকে দুর্বল করে তোলা এবং শেষ পর্যন্ত একটি ইসলামি খিলাফত রাষ্ট্র কায়েম করা।
আবু রাফসুর মতো জঙ্গিরা এই পরিকল্পনার কার্যকরী সৈনিক।
তার উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং হত্যার আহ্বান কেবল ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য নয়, বাংলাদেশের সার্বভৌম অস্তিত্বের জন্যও মারাত্মক হুমকি।
বাংলাদেশ একটি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।
এখানে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত।
কিন্তু আজ যদি রাষ্ট্রীয় নীরবতা ও রাজনৈতিক উদাসীনতায় হিজবুত তাহরীরের মতো জঙ্গি সংগঠনরা প্রকাশ্যে সংখ্যালঘু হত্যার ডাক দিতে পারে, তবে এটি আগামী দিনে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার রূপ নিতে পারে।
রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো অবিলম্বে আবু রাফসুকে গ্রেফতার করা, তার সংগঠন হিজবুত তাহরীরকে চিরতরে নিষিদ্ধ করা এবং জঙ্গি আশ্রয়দাতাদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো।
অন্যথায় বাংলাদেশের সংবিধান, ধর্মীয় সম্প্রীতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চরম হুমকির মুখে পড়বে।

 
                         
         
         
        