 
                  ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসন পুনর্বিন্যাস ও মামলার প্রতিবাদে ব্যাপক সংঘর্ষ, থানা ও উপজেলা পরিষদে হামলা-ভাঙচুর, পুলিশকে ধাওয়া, অফিসার্স ক্লাবে অগ্নিসংযোগ।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস ও পুলিশের দায়ের করা মামলার প্রতিবাদে রবিবার দুপুরে ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ, থানা, এমনকি অফিসার্স ক্লাবও বিক্ষোভকারীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগ থেকে রক্ষা পায়নি। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে জনপদে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল থেকেই ভাঙ্গায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়।
এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্দোলনকারীদের বাধা দিলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী একত্রিত হয়ে একযোগে সরকারি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভাঙ্গা থানায় হামলার সময় পুলিশ সদস্যরা প্রাণ বাঁচাতে পাশের মডেল মসজিদে আশ্রয় নেন।
পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে বিক্ষোভকারীরা থানার সামনে থাকা একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে। এমনকি সেনাবাহিনীর একটি এপিসির ওপরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।
এসময় উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। নির্বাচন কার্যালয়সহ ইউএনও কার্যালয়ের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এছাড়া ভাঙ্গা অফিসার্স ক্লাবে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।
হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রোকিবুজ্জামান বলেন, “আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি।
পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, তারা নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন।
তার ভাষায়, “কারো ওপর হামলার ঘটনা ঘটেনি। তবে উপজেলা কার্যালয়ে ভাঙচুর হয়েছে, নির্বাচন কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।”
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভাঙ্গার এই সহিংসতা শুধু আসন পুনর্বিন্যাস বা মামলার প্রতিবাদ নয়, বরং এটি সরকারের প্রশাসনিক কাঠামোর বিরুদ্ধে গভীর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, প্রশাসন সংস্কারের নামে দমনমূলক নীতি চালাচ্ছে এবং জনগণের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করছে।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, পুলিশ ও প্রশাসন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সচেষ্ট থাকলেও এলাকায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও যান চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে।

 
                         
         
         
        