বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। পাঁচ দফা দাবি ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আবারও রাজনৈতিক অঙ্গনে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে পিআর (Proportional Representation) পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রসঙ্গে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মগবাজারের আল-ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের হুঁশিয়ারি দেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন না হলে দলটি কঠোর আন্দোলনে নামবে।
তাহের বলেন, “পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন মানে জনগণের ভোটাধিকার হরণ। আমরা কোনো অবস্থাতেই এমন নির্বাচন মেনে নেব না।”
তিনি আরও যোগ করেন, সরকার যদি তাদের প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে, তবে রাস্তায় নেমে শক্ত আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প থাকবে না।
✦ পাঁচ দফা দাবি
জামায়াতের পক্ষ থেকে এই সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় সনদসহ পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
- জাতীয় সনদ প্রণয়ন।
- পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন।
- রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক কার্যক্রমে পূর্ণ স্বাধীনতা।
- কারাবন্দী নেতাকর্মীদের মুক্তি।
- রাজনৈতিক মামলাগুলো প্রত্যাহার।
✦ কর্মসূচি ঘোষণা
সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান,
- ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল হবে।
- ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরগুলোতে কর্মসূচি পালিত হবে।
- ২৬ সেপ্টেম্বর সারাদেশে একযোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
তাহের দাবি করেন, “জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।” তবে একইসঙ্গে তিনি স্বীকার করেন,
একই দাবিতে অনেক রাজনৈতিক দল আন্দোলনে নামতে পারে, কিন্তু সেটিকে এখনই যুগপৎ আন্দোলন বলা যাবে না।
✦ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
বর্তমান পরিস্থিতিতে জামায়াতের এই কর্মসূচি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বিশেষ করে জুলাইয়ের অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রেক্ষাপটে নতুন সনদ ও সংস্কারভিত্তিক আন্দোলনের মধ্যে জামায়াতের অংশগ্রহণ অন্য দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের ইঙ্গিত দিলেও, তাহের এখনও যুগপৎ আন্দোলনের সম্ভাবনা স্পষ্ট করেননি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াতের এই অবস্থান একদিকে সরকারকে চাপ দিচ্ছে, অন্যদিকে জুলাই ঐক্য ও অন্য দলগুলোর সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কও গড়ে তুলতে পারে।
পিআর ইস্যু ঘিরে জামায়াতের এই কঠোর হুঁশিয়ারি ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের সংঘাত তৈরি করতে পারে।
১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ঘোষিত কর্মসূচি কতটা সফল হয় এবং অন্যান্য দল এতে কতটা সম্পৃক্ত হয়, সেটিই এখন রাজনৈতিক মহলের নজরকাড়া বিষয়।
