 
                  মেট্রোরেলের বাড়তি কোচ না এনে নতুন নিয়োগ ও ট্রেন সংখ্যা বাড়ানোর পথে এগোচ্ছে ইউনুস সরকার। এতে খরচ ও দুর্নীতি বাড়ছে, অথচ যাত্রীসেবায় আসছে না স্বস্তি।
বাংলাদেশের রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে মেট্রোরেল প্রকল্প ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের একটি দূরদর্শী স্বপ্ন। ভিশন ছিল এমন—স্বল্প খরচে অধিক যাত্রী পরিবহন, যাতে লাখো সাধারণ মানুষ প্রতিদিনের যাতায়াতে স্বস্তি পায়। সেই ভিশনের অংশ হিসেবে প্রতিটি মেট্রোরেল স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছিল বাড়তি দৈর্ঘ্যে, যাতে প্রয়োজনে সহজেই দুটি কোচ যোগ করে ট্রেনকে ৮ কোচে রূপান্তর করা যায়।
২০২৩ সালে ডিএমটিসিএলের তৎকালীন এমডি ঘোষণা দিয়েছিলেন—ভবিষ্যতে প্রতিটি ট্রেন ৮ কোচে চলবে।
উদ্দেশ্য ছিল স্পষ্ট: একই লোকবল, একই অবকাঠামো, কিন্তু আরও বেশি যাত্রী।
এর ফলে কম খরচে বেশি পরিবহন সম্ভব হতো।
এটি ছিল একটি টেকসই নগর পরিকল্পনার প্রতিচ্ছবি।
আজকের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো।
বাস্তবে প্রতিটি ট্রেন চলছে মাত্র ৬ কোচে, আর বাড়তি জায়গা লোহার বেড়া দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে।
অবৈধ অন্তর্বর্তী সরকার বলছে—বাজেটের কারণে নতুন কোচ আনা সম্ভব নয়।
অথচ যুক্তি বলছে, একই ট্রেনে দুটি কোচ যোগ করলে প্রতিদিন অতিরিক্ত হাজারো যাত্রী পরিবহন করা যেত—খরচ না বাড়িয়ে।
বাড়তি কোচ না এনে সরকার বেছে নিয়েছে অন্যপথ—ট্রেন সংখ্যা বাড়ানো।
এর মানে নতুন প্রকল্প, নতুন জনবল, নতুন নিয়োগ, নতুন খরচ।
এবং এর আড়ালে আছে নতুন কমিশন, নতুন বাণিজ্যিক সুযোগ, আর সময়ক্ষেপণ।
অর্থাৎ আওয়ামী লীগের পরিকল্পনা যেখানে ছিল সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য সেবা, সেখানে ইউনুস সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রকল্প বানিয়ে ট্যাক্সের টাকা থেকে লাভবান হওয়া।
এই পদক্ষেপের ফলে জনগণের ভোগান্তি আরও বাড়বে।
যাত্রীদের জন্য স্বস্তির পরিবর্তে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা, বারবার দেরি আর ভাড়া বৃদ্ধির চাপই হবে বাস্তব চিত্র।
অথচ ভিন্ন পরিকল্পনা থাকলে একই অবকাঠামো ব্যবহার করে উন্নত সেবা দেওয়া যেত।
এখানে মূল বৈপরীত্যটি স্পষ্ট—
ত্রীকেন্দ্রিক, দক্ষতা ও সাশ্রয়ের ভিত্তিতে পরিকল্পনা।
নিয়োগ, কমিশন ও স্বার্থকেন্দ্রিক প্রকল্প-নির্ভর পরিকল্পনা।
এভাবে মেট্রোরেলের মতো একটি জাতীয় সম্পদ ও আধুনিক নগর পরিকল্পনার প্রতীককে ব্যবহার করা হচ্ছে শুধুমাত্র ব্যবসা ও নিয়োগের ফন্দি আঁকার জন্য।

 
                         
         
         
        