রোমের মেয়র রবার্তো গুয়ালতিয়েরির সঙ্গে ড. ইউনূসের বৈঠকের ছবিতে দেখা যায়, মেয়রের জুতার তলা সরাসরি ড. ইউনূসের দিকে। সংস্কৃতিগত অসম্মান নাকি কূটনৈতিক ঔদ্ধত্য—এই প্রশ্নেই এখন বিশ্বজুড়ে বিতর্ক।
রোমের মেয়র রবার্তো গুয়ালতিয়েরির সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক বৈঠকের একটি ছবি যেন আন্তর্জাতিক শিষ্টাচার ও সংস্কৃতিগত সংবেদনশীলতার এক সূক্ষ্ম পরীক্ষা নিয়ে এসেছে।
বৈঠকের পর সৌহার্দ্যমূলক বিবৃতি প্রকাশ পেলেও, ছবিতে মেয়রের বসার ভঙ্গি—বিশেষত জুতার তলা ড. ইউনূসের দিকে থাকা—বিশ্বজুড়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কেবল একটি সাধারণ ভঙ্গি নয়; বরং এটি ‘বডি ল্যাঙ্গুয়েজ’–এর এমন এক রূপ, যা বার্তাবাহী।
দক্ষিণ এশীয় সংস্কৃতিতে কারো দিকে জুতার তলা প্রদর্শন করা চরম অসম্মান ও অবমাননার প্রতীক।
অথচ এই বৈঠকে দেখা যায়,
মেয়র আরামদায়ক ভঙ্গিতে এক পা অপর পায়ের ওপর তুলে বসেছেন—এমনভাবে যে তাঁর জুতার তলা প্রায় সরাসরি ড. ইউনূসের দিকে নির্দেশ করছে।
এই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই শুরু হয় প্রতিক্রিয়ার ঝড়।
কেউ একে ‘অসতর্কতা’ বলছেন, কেউ দেখছেন ‘ঔদ্ধত্যের’ নিদর্শন হিসেবে।
একজন আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত নোবেলজয়ীর সামনে এমন ভঙ্গি কি সত্যিই কাকতালীয়?
নাকি এটি কোনো সূক্ষ্ম রাজনৈতিক বার্তা?
বিশ্লেষকদের মতে,
এই ঘটনাটি পশ্চিমা রাজনৈতিক সংস্কৃতির সেই অহংকারের প্রতিফলন, যেখানে নিজের ভঙ্গিমাই “নিয়ম” বলে ধরা হয়, অপর সংস্কৃতির প্রতি সম্মান নয়।
ড. ইউনূস বিনয়ী ও সম্মানজনক ভঙ্গিতে বসে ছিলেন, অথচ তাঁর বিপরীতে থাকা মেয়রের ভঙ্গি কূটনৈতিক শালীনতাকে ছাপিয়ে গেছে আত্মতুষ্ট অহঙ্কারে।
রোম সিটি কাউন্সিলের তরফে এখনো কোনো ব্যাখ্যা বা দুঃখপ্রকাশ না আসায়, বিতর্ক আরও জোরালো হচ্ছে।
একই সঙ্গে অনেকেই উল্লেখ করছেন, মেয়রের এই আচরণ শুধু একজন নোবেলজয়ীর প্রতি অসম্মান নয়, বরং এটি আন্তঃসাংস্কৃতিক শালীনতার একটি বড় ব্যর্থতা।
এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠছে—আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক আচার-আচরণের নেপথ্যে কি এখন অহংকারই নতুন ভাষা হয়ে উঠছে?
ছবিটি হয়তো একটি মুহূর্তের নিদর্শন, কিন্তু এর প্রতীকী বার্তা গভীর—“সম্মান” এখন শুধু আনুষ্ঠানিক শব্দ, আচরণে নয়।
