 
                  বাড়িভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। সিদ্ধান্তহীন অবস্থানে সরকার।
বাড়িভাড়া ভাতাসহ তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে আন্দোলনকারীরা পুলিশের বাধা অতিক্রম করে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলে, ফলে ঢাকাবাসী দুর্ভোগে পড়েন।
তাঁদের প্রধান দাবি—মূল বেতনের ২০% হারে বাড়িভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা ১,৫০০ টাকা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫% বাড়ানো।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষকরা।
ঢাকার উত্তরখান হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, “মোট বেতন ১৮,৩০০ টাকা দিয়ে ঢাকায় থাকা-খাওয়া ও চলাফেরা সম্ভব নয়।”
তিনি আরও জানান, ভাড়া বাসায় এক রুমে তিনজন মিলে থাকেন। মাসে শুধু ভাড়াতেই দিতে হয় ৫,০০০ টাকা।
বাংলা, ইংরেজি, গণিতের মতো সাধারণ বিষয়ের শিক্ষকদের বেতন শুরু হয় মাত্র সাড়ে ১২ হাজার টাকা থেকে। শিক্ষকরা বলছেন, এই বেতন দিয়ে পরিবার চালানো অসম্ভব।
সারা দেশে আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মবিরতি চলছে, যা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে অনিশ্চয়তায় ঠেলে দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চলছে অবস্থান কর্মসূচি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে অর্থ বিভাগকে ২০%, ১৫%, ১০% ও ৫% হারে বাড়িভাড়া বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট হিসাব পাঠিয়েছে।
২০% বাড়াতে বছরে লাগবে প্রায় ৩,৪০০ কোটি টাকা। তবে অর্থ সচিব ও উপদেষ্টা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় সিদ্ধান্ত আসতে দেরি হচ্ছে।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলেছেন, এবার প্রজ্ঞাপন ছাড়া তারা ঘরে ফিরবেন না। প্রয়োজনে আমরণ অনশনেও যাবেন।
সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কার্যকর পদক্ষেপ না আসায় পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মেনে না নিলে শিক্ষাব্যবস্থায় বড় সংকট তৈরি হতে পারে।
আন্দোলনকারীদের হুমকি ও প্রত্যয়
শিক্ষকেরা সরাসরি হুমকি দিয়েছেন:
“এবার প্রজ্ঞাপন না হলে আমরণ অনশনেও যেতে প্রস্তুত।“
তাঁরা শাহবাগ ছাড়াও এখন শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন এবং ঘোষণা দিয়েছেন, সরকার ব্যবস্থা না নিলে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে লংমার্চ করবেন।
এই আন্দোলন শুধু বেতন-ভাতার দাবি নয়, বরং এটি শিক্ষকদের জীবনের মর্যাদা ও নিরাপত্তার প্রশ্ন।
শিক্ষকদের আর্থিক দুরবস্থায় শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মানও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
সরকার যদি সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এই আন্দোলন জাতীয় সংকটে রূপ নিতে পারে।

 
                         
         
         
        