রাজধানীতে গ্রেপ্তার হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই মো. শাহাদাত হোসেন। ডিবির অভিযানে আরও আট নেতাকর্মী আটক। তদন্ত চলছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মো. শাহাদাত হোসেনকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) গ্রেপ্তার করেছে। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দলটির অঙ্গসংগঠনের আরও ৮ জন নেতাকর্মীকে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই গ্রেপ্তার অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন,
“এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে। তদন্ত চলছে।”
কে এই শাহাদাত হোসেন?
মো. শাহাদাত হোসেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত মুখ। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ।
সম্প্রতি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছিলেন, তবে বিপুল ভোটে পরাজিত হন।
তাঁর বড় ভাই আবদুল কাদের মির্জা নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র এবং আওয়ামী লীগেরই আরেক বলিষ্ঠ নেতা।
ওই নির্বাচনে কাদের মির্জা সমর্থন দেন বিজয়ী প্রার্থী শরীফ চৌধুরী পিপুলকে, যিনি শাহাদাত হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন।
এ নিয়ে এলাকায় ভ্রাতৃঘাতী রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নতুন নয়। স্থানীয় রাজনীতিতে কাদের মির্জা ও শাহাদাত হোসেনের অবস্থান স্পষ্টভাবেই বিভক্ত।
গ্রেপ্তারের কারণ এখনো অজানা
ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তারের কারণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি কোনো নির্দিষ্ট অভিযোগ বা চলমান তদন্তের অংশ হতে পারে।
অনেকেই মনে করছেন, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও অভ্যন্তরীণ প্রতিহিংসার কারণেও এই গ্রেপ্তার হতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ডিবি গোয়েন্দারা রাজধানীর মিরপুর, গুলশান ও মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাহাদাত হোসেন ও অন্যদের গ্রেপ্তার করে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনায় এখনো আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বা ওবায়দুল কাদেরের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি।
তবে দলটির ভেতর থেকে কেউ কেউ বিষয়টিকে ‘সংগঠনশৃঙ্খলার চরম লঙ্ঘন’ এবং ‘আভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফল’ বলেও উল্লেখ করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে নানা হিসাব-নিকাশ চলছে। শাহাদাত হোসেনের গ্রেপ্তার সেই প্রক্রিয়ারই একটি অংশ হতে পারে।
গ্রেপ্তার হওয়া শাহাদাত হোসেন একজন রাজনৈতিকভাবে পরিচিত মুখ এবং প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য।
তাই এই ঘটনা শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয় নয়, বরং তা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির চিত্রও ফুটিয়ে তোলে।
এখন দেখা যাক, তদন্ত শেষে কী তথ্য বেরিয়ে আসে এবং দলীয় পর্যায়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
