 
                  ইউক্রেনের মতো বাংলাদেশে ভূখণ্ড হারানোর বিপদজনক পথচলা শুরু
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছিল বাংলাদেশের জন্য শুধু একটি সরকার পরিবর্তনের দিন নয়; বরং তা ছিল একটি সুপরিকল্পিত ভূখণ্ড দখল প্রক্রিয়ার সূচনা। নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও করপোরেট স্বার্থের প্রতিনিধি ড. ইউনুসকে স্থাপন করা হয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে ২০১৪ সালের ইউক্রেনের ঘটনা মনে করছেন।
তখন ইউক্রেনে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে বসানো হয়েছিল পশ্চিমা প্রভাবিত এক সরকার, যার ফলাফল আজ স্পষ্ট—২৫% ভূখণ্ড চলে গেছে রাশিয়ার হাতে, আর বাকি অংশ পশ্চিমা করপোরেশনদের দখলে। বাংলাদেশে আজকের পরিস্থিতিও সেই একই ছকে এগোচ্ছে।
সেন্ট মার্টিন, সোনাদিয়া ও পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদেশি আধিপত্যের ইঙ্গিত
বাংলাদেশে ভূখণ্ড দখল প্রক্রিয়া এখন ঘটছে তথাকথিত “উন্নয়ন”, “বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল” ও “নিরাপত্তা চুক্তি”র নামে।
- সেন্ট মার্টিনে নজরদারি কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে, যা পর্যটনের আড়ালে নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণের কৌশল।
- সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নয়, তৈরি হচ্ছে বিদেশি ঘাঁটি।
- পার্বত্য চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক সহায়তার নামে স্থানীয় প্রশাসনের কর্তৃত্ব খর্ব করে তৈরি হচ্ছে এক নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল।
এই অঞ্চলে ভূমির মালিকানা ও নাগরিক অধিকার ক্ষয়ে যাচ্ছে, এবং দেশের কোনো সংস্থা নয়—বিদেশি কনসোর্টিয়াম পরিচালনা করছে খনিজ অনুসন্ধান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন।
সরকারের প্রচার: উন্নয়ন না দখলদারি?
নতুন সরকার প্রতিটি পদক্ষেপকে ‘উন্নয়ন’ বলে প্রচার করলেও বাস্তবে এগুলো হচ্ছে কৌশলগত দখলদারির নমুনা।
- সেন্ট মার্টিন হবে ‘নিরাপত্তা এলাকা’, যেখানে সাধারণ নাগরিকের প্রবেশ সীমিত হবে।
- সোনাদিয়া হবে ‘অর্থনৈতিক গেটওয়ে’, যেখানে বাংলাদেশের কর্তৃত্ব থাকবে না।
- পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিচালিত হবে বিদেশি সহায়তা ও নিয়ন্ত্রণে, যেখানে সংবিধান উপেক্ষিত হবে।
হারিয়ে যাবে মানচিত্র, যদি প্রশ্ন না তুলি এখনই
এই ভূখণ্ড দখলের পরিকল্পনা শুধুই অর্থনৈতিক নয়, এটি রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বেরও অন্তর্ঘাত। ইউক্রেনের মতো বাংলাদেশও যদি এই পথেই এগোয়, তাহলে ২০৩৪ সালে হয়তো আমাদের মানচিত্র আর আগের মতো থাকবে না। থাকবে কেবল চুক্তি, অনুমতি ও নিয়ন্ত্রিত প্রবেশাধিকার।
উপসংহার: ইতিহাস নয়, প্রতিরোধ হোক পুনরাবৃত্তি
লেখক জি. ইসলাম সতর্ক করছেন—এখনই সময় প্রশ্ন তোলার, প্রতিরোধ গড়ার এবং রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে নেওয়ার। নইলে আমরা হব সেই হারিয়ে যাওয়া মানচিত্রের বাসিন্দা, যাদের নাম থাকবে শুধুই ইতিহাসের গায়ে।

 
                         
         
         
        