হলি আর্টিজান মামলায় ফাঁসির সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড—এ কি ন্যায়বিচার? ইউনুস সরকারের অধীনে জঙ্গিবাদের রাজনৈতিক মদদ ও রাষ্ট্রীয় নির্দেশে বিচারের ভয়াবহ মুখোশ উন্মোচন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই, গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে এক ভয়াবহ রাত। ২২ জন নিরপরাধ দেশি-বিদেশি নাগরিককে নৃশংসভাবে হত্যা করে নব্য জেএমবির জঙ্গিরা। ওই দিন শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। সন্ত্রাসবাদ নতুনভাবে চিহ্নিত হয়েছিল বাংলাদেশের বুকে। এই অপরাধের বিচার নিয়ে জাতি বহুদিন অপেক্ষায় ছিল—সেই বিচারের পরিণতিতে হাইকোর্ট যখন ফাঁসির সাজা লঘু করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়, তখন প্রশ্ন উঠে আসে: এটা কি ন্যায়বিচার, নাকি রাষ্ট্রীয় সমঝোতার চূড়ান্ত প্রকাশ?
এই রায় দেশের আইনি ব্যবস্থার ভয়াবহ পতনের প্রতীক হয়ে উঠেছে। ফাঁসির রায় যারা প্রত্যাশা করেছিল, তারা দেখলো খুনিদের রক্ষাকবচ হয়ে উঠেছে রাষ্ট্রীয় অভিলাষ।
একটি স্বাধীন আদালত কি এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে—যেখানে জঙ্গিরা প্রকাশ্যে আন্তর্জাতিক হত্যাযজ্ঞ চালায়? নাকি এটি রাষ্ট্রের শীর্ষপর্যায় থেকে অনুজ্ঞাপ্রাপ্ত একটি “সন্দেহজনক বার্তা”?
মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার শুরু থেকেই একটি রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে—এই সমঝোতায় রয়েছে আন্তর্জাতিক ইসলামিক গোষ্ঠীর ছায়া। দোহা, তেহরান, আঙ্কারা, কুয়ালালামপুর—এইসব রাজধানী থেকে উঠে আসা নীতি ও চাপ যেন বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থাকেও নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকার জঙ্গি গোষ্ঠীর সাথে নীরব আঁতাতে আবদ্ধ, যা এই রায়ের মাধ্যমেই উন্মোচিত হলো।
সাম্প্রতিক সময়ে আমরা একাধিক হাই-প্রোফাইল মামলায় রাষ্ট্রের ইচ্ছানুযায়ী বিচার হতে দেখেছি। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এই রায় কি বিচারপতিদের রায়, নাকি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত নির্দেশনা? জঙ্গিদের ফাঁসির রায় লঘু করা মানে হল—রাষ্ট্র তাদের অপরাধকে হালকাভাবে দেখছে, এমনকি হয়ত ভবিষ্যতে ব্যবহারযোগ্য সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করছে।
হলি আর্টিজান হামলা নিছক একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না। এটি ছিল বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের মানচিত্রে বসানোর একটি পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ। সেই হত্যার মাস্টারমাইন্ডদের সাজা কমিয়ে দেওয়ার অর্থ কী? এটা কি বিদেশি চাপ, নাকি ইসলামিক রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের মনোরঞ্জন?
এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে, রাষ্ট্র ও জঙ্গিবাদের অদৃশ্য আঁতাত আমাদের চোখে পড়ে।
এই সরকার জানে, দেশে গণভিত্তি দুর্বল। তাই তারা রাজনৈতিকভাবে অচল হয়ে ইসলামিক গোষ্ঠীর সমর্থনে টিকে থাকার পথ বেছে নিয়েছে। সেই টিকে থাকার নীতি হলো—জঙ্গি রক্ষা = ক্ষমতা রক্ষা। এই রায় তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
আজ যারা রায় দিয়েছে, কাল তারা পাল্টে যাবে। কিন্তু ইতিহাসের চোখে এরা চিরকালই অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত থাকবে। যারা শহীদ হলেন, যারা আত্মাহুতি দিলেন—তাদের রক্ত কখনো বৃথা যাবে না। আজ হোক, কাল হোক, এই রক্তের হিসাব ইতিহাস চাইলেই তুলবে।
হলি আর্টিজান ছিল একটি জাতির রক্তাক্ত বিভীষিকা, আর এই রায় সেই জাতিকে আবার অপমান করল। যারা রক্ত দিয়েছিল, তারা আজও বিচার চায়। জনগণের আদালত বড়। সেখানে ইউনুস সরকার ও তার #জঙগি-সহযোগীদের রেহাই নেই। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে লড়াই চলবে—শেষ হাসি হাসবে ইতিহাস, খুনিরা নয়।
