
রোহিঙ্গাদের মানবিক করিডোর বাস্তবায়নের নামে দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলতে ইউনূস ও খলিল গোষ্ঠীর নেতৃত্বে চলছে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের অর্থায়ন, গোপন বৈঠক, ও অস্ত্রপাচার ঘিরে তৈরি হয়েছে বহুমাত্রিক সংকট।
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য প্রস্তাবিত ‘মানবিক করিডোর’ প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ওপর ভয়ংকর এক ষড়যন্ত্রের ছায়া নেমে এসেছে। এই ষড়যন্ত্রের কেন্দ্রে রয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান।
মার্কিন ও ব্রিটিশ সহায়তায় করিডোর ষড়যন্ত্র
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফার ল্যান্ডয়ের সঙ্গে গোপন বৈঠকে মানবিক করিডোর বাস্তবায়নের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছেন খলিল। এরই মধ্যে কানাডাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান Alinea International-এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ১.৭৭ লাখ পাউন্ড অর্থ বরাদ্দ করেছে, যার লক্ষ্য ইউনূস সরকারকে কারিগরি সহায়তা প্রদান এবং শাসন কাঠামো ঢেলে সাজানো।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য নাম উইলিয়াম মরিসন, যিনি অতীতে ব্রিটিশ তহবিল কেলেঙ্কারিতে যুক্ত ছিলেন এবং বর্তমানে এ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
তারেক রহমানের গোপন সম্মতি ও বিএনপির দ্বিচারিতা
বিশ্বস্ত সূত্র অনুযায়ী, ১১ জুন লন্ডনে তারেক রহমান, ইউনূস ও খলিলের বৈঠকে মানবিক করিডোর ইস্যুতে রাজনৈতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা হয়। বিএনপি প্রকাশ্যে বিরোধিতা করলেও দলের অভ্যন্তরে গোপনে পরিকল্পনার সঙ্গে একমত হয়েছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
এর পর ১৪ জুন ইউনূস-তারেকের মধ্যে লন্ডনের ডরচেস্টার হোটেলে চূড়ান্ত আলোচনা হয় এবং একইদিন খলিল সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।
অস্ত্র পাচার ও চীনের উদ্বেগ
আরেক দিক থেকে উদ্বেগজনক বিষয় হলো—টেকনাফ থেকে মংডু এলাকায় অস্ত্র পাচারের অভিযোগ। বলা হচ্ছে, প্রশাসনের কিছু অংশের যোগসাজশে এটি সংঘটিত হচ্ছে এবং এতে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা গোষ্ঠী জড়িত।
চীনা দূতাবাসও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
বিকল্প পথ: রিট ও নির্বাহী আদেশ
সরকারি সিদ্ধান্তের অভাবে করিডোর বাস্তবায়নের বিকল্প পথ নিয়েছে ইউনূস গোষ্ঠী। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান ১৫ জুন এক আইনি নোটিশ পাঠান পররাষ্ট্র সচিব, দুর্যোগ সচিব এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার নামে। এতে বলা হয়, রাখাইন রাজ্যে খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠাতে ব্যর্থ হলে রিট করা হবে।
এই তথাকথিত মানবিক করিডোর এখন আর ত্রাণ সরবরাহ নয়—এটি হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক আধিপত্য, আন্তর্জাতিক প্রভাব এবং অভ্যন্তরীণ শাসনব্যবস্থার পুনর্গঠনের একটি টুল। বাংলাদেশের জন্য এটি এক ভয়ানক রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অবিলম্বে জাতীয় ঐকমত্য ছাড়া এই ধরনের উদ্যোগ রাষ্ট্রীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে যাবে।
