
বাংলাদেশে নারী ও শিশুর ওপর ধর্ষণ, যৌন সহিংসতা এবং মব লিঞ্চিং বাড়ছে। নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এর জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করছে।
অনলাইন ডেক্সঃ মুক্তিবার্তা৭১
বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে ভয়াবহ উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। একদিকে লাগাতার ধর্ষণ, যৌন সহিংসতা, অপরদিকে মব লিঞ্চিং এবং সড়কে প্রকাশ্য ডাকাতির মতো ঘটনা—সব মিলিয়ে দেশের সামগ্রিক জননিরাপত্তা ভেঙে পড়েছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষক ও মানবাধিকার কর্মীরা।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে:
- খুলনায় ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা,
- ঢাকায় বাসায় একক মায়ের ওপর যৌন হামলা ও শ্বাসরোধ,
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাইকিং করে ছেলেধরা সন্দেহে এক রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যা,
- কক্সবাজারে ডাকাতি ও গৃহবধূকে গুলি করে হত্যা,
 এইসব ঘটনার পেছনে এক ভয়াবহ রাষ্ট্রীয় শূন্যতার চিত্র ফুটে উঠছে।
সুশীল সমাজের নেতারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো সুসংগঠিত প্রশাসনিক কাঠামো নেই, নেই আইনের যথাযথ প্রয়োগ। ফলে অপরাধীরা খোলাখুলি অপরাধ করতে সাহস পাচ্ছে, আর নিরীহ নাগরিকেরা প্রতিনিয়ত ভয়, আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।
নারীবাদী সংগঠন “নারীর কথা”র প্রধান নির্বাহী রাশেদা পারভীন বলেন:
“আমরা এখন এমন এক সময়ে আছি, যেখানে রাস্তায় একজন নারী শুধু নয়, একটি শিশুও নিরাপদ নয়। আইন নেই, প্রশাসন নেই—শুধু সহিংসতা আছে।”
মানবাধিকার সংগঠন “অধিকার পর্যবেক্ষণ ট্রাস্ট (APT)” এক রিপোর্টে জানায়, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ৩২% বেড়েছে। গৃহস্থালি নির্যাতন, বাল্যবিয়ে, এবং স্কুলে সহপাঠীদের দ্বারা যৌন হয়রানির ঘটনা বেড়েছে মারাত্মক হারে।
⚠️ অন্তর্বর্তী সরকারের নীরবতা:
এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়—অন্তর্বর্তী সরকারের নিরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাষ্ট্র যখন বৈধতা হারায়, অপরাধ তখন প্রবল হয়। অন্তর্বর্তী সরকার প্রশাসনকে শুধু দুর্বলই করেনি, বরং এর মাধ্যমে দেশে একটি নিরাপত্তাহীন, ভয়ংকর অরাজকতার পরিবেশ তৈরি করেছে।
বাংলাদেশে নারী, শিশু এবং সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ। ধর্ষণ, পিটিয়ে হত্যা এবং সহিংসতার এই স্রোতের পেছনে আছে এক ব্যর্থ, বৈধতা-হীন, দায়িত্বহীন প্রশাসনের ছায়া। এখনই যদি এই পরিস্থিতির সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে সামনে অপেক্ষা করছে এক ভয়াবহ সামাজিক বিপর্যয়।

 
                         
         
         
        