 
                  বাণিজ্যিক ট্যারিফ স্বাভাবিক সমন্বয়কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সৃষ্টি হয়েছে বিজয়ের আনন্দোৎসব। বিশ্ববাণিজ্যের নিয়ম অনুযায়ী “রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ ” একটি স্বাভাবিক সমন্বয় প্রক্রিয়া।
বিশ্ববাণিজ্যের নিয়ম অনুযায়ী “রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ ” একটি স্বাভাবিক সমন্বয় প্রক্রিয়া। অধিকাংশ দেশই ২০২৫ সালে তাদের দুইপাক্ষিক শুল্ক হার ১৫%–২০% কমিয়েছে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি ও বিনিয়োগ স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য।
কিন্তু বাংলাদেশে, এই স্বাভাবিক ঘটনা যেন এক “বিজয় দিবস” উদযাপনের উপলক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুদ্ধজয় না উল্লাসে হার?
সকালের কাগজে হেডলাইন—“আমাদের দাবির কাছে মাথা নুইয়ে দিলো দুনিয়া!”
বাস্তবে হয়তো এমন হয়েছে:
👉 অন্য দেশের প্রতিনিধি বলেছে, “ঠিক আছে ভাই, নাও, চুপ করো।”
যেখানে যুক্তি ও পরিসংখ্যান দিয়ে বিশ্লেষণ হওয়ার কথা, সেখানে উত্তেজনা-সর্বস্ব রাজনৈতিক বক্তব্য ও মিডিয়া প্রোপাগান্ডাই মুখ্য হয়ে উঠেছে।
বাস্তবতা বনাম আবেগ
আন্তর্জাতিক বাস্তবতা:
- একাধিক দেশ আগেই ঘোষণা করেছে ট্যারিফ হ্রাস করছে তারা নিজস্ব অর্থনৈতিক পলিসি ও বাজারে সাড়ার কারণে
- একে “বাংলাদেশের জয়ের ফল” বলা কতটা যৌক্তিক?
আমাদের অবস্থান:
- আমরা এখনো মৌলিক উৎপাদন কাঠামো ও রপ্তানিযোগ্য বৈচিত্র্য গঠনে পিছিয়ে
- অথচ মুখে বলছি: “আমরাই চাপ দিয়ে ছাড়িয়ে আনছি”
উত্তেজনার অলিম্পিক
দেশের সোশ্যাল মিডিয়া যেন এক বিশাল জয়যাত্রার স্টেডিয়াম।
🗣 “রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ কমানোর মাধ্যমে আমরা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছি!”
– এধরনের পোস্টে লাইক-শেয়ার ঝড় তুলছে, বাস্তবতা থাক বা না থাক।
সত্যি কথা বলতে কি, এই জাতীয় আবেগ এখন আমাদের জাতীয় ভিটামিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কারণ উত্তেজিত না হলে, “জোশ” আসে না!
উত্তেজিত জনগণ” ক্যাটাগরিতে সোনা নিশ্চিত?
যুদ্ধ জিতেছি কি না জানি না, কিন্তু ফেসবুক, ইউটিউব আর সংবাদে যে উত্তেজনার ঢেউ—
তাতে বোঝাই যাচ্ছে, ‘উত্তেজিত জনগণ’ ইভেন্টে অলিম্পিক পদক নিশ্চিত!
আর বাস্তবতা?
যদি সত্যিই ট্যারিফ কমানো আন্তর্জাতিক সমন্বয়েরই অংশ হয়ে থাকে, তাহলে তো প্রশ্ন দাঁড়ায়—
আমাদের যুদ্ধ কোথায় ছিল?
আর জয়টা আসলে কার?
একটি রাষ্ট্র যখন তার জনগণকে উত্তেজনায় রাখতে চায়, তখনই সে তথ্য লুকায়।
রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ কমানোর মতো একটি সাধারণ অর্থনৈতিক সমন্বয়কে “বিজয়ের ফল” বলা,
তথ্যকে আবেগ দিয়ে ঢাকার প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।
আসল প্রশ্ন হলো—
👉 আমরা কি বাস্তব উন্নয়ন চাই, নাকি ফেসবুকের জোশে ভেসে থাকতে চাই?

 
                         
         
         
        