 
                  মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণের ঘটনায় আহত ১০ জন। শেখ হাসিনার দেশ-ত্যাগের মুহুর্ত ব্যঙ্গভাবে স্মরণ করতে বেলুন উড়াতে গিয়ে ঘটে বিস্ফোরণ।
রাজধানী ঢাকার হৃদয়ে অবস্থিত মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট ২০২৫) পরিণত হয়েছিল এক নাটকীয় দুর্ঘটনার মঞ্চে। ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক প্রতীকী কর্মসূচিতে উড়ানো গ্যাস বেলুন বিস্ফোরিত হয়ে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে – ঠিক সেই সময়ে, যখন গত বছর (২০২৪) কথিতভাবে শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়ে দেশত্যাগ করেন।
এই প্রতীকী আয়োজনটি ছিল মূলত একটি রাজনৈতিক নাট্যকলা – যেখানে শেখ হাসিনার হেলিকপ্টারে দেশ-ত্যাগের মুহুর্ত ব্যঙ্গভাবে স্মরণ করতে তৈরি করা হয়েছিল।
সেই বেলুনটিই বিস্ফোরিত হয়ে আহত করে দেয় অংশগ্রহণকারীদের।
এই ঘটনার পেছনে শুধুমাত্র একটি দুর্ঘটনা নেই, রয়েছে একটি গভীর রাজনৈতিক প্রতীকী বার্তা এবং সেই বার্তার বিপর্যয়ও।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, আহতদের মধ্যে রয়েছেন:
- মো. মাজহারুল ইসলাম (২৭), মো. বিল্লাল (৪৫), মো. ফাহাত (২০), মো. মুনসুর ইসলাম (৩৮),
- মো. শরীফ (৩২), মো. পলাশ (২১), মো. হাবিবুল্লাহ (২৩),মো. ইয়াসিন (২৫), মো. মিশু (২৩), মো. মিহাত (১৭)
ডা. শাওন বিন রহমান জানান, আহতদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে বিস্ফোরণের শব্দ, আতঙ্ক এবং দগ্ধ চামড়ার গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে পুরো অ্যাভিনিউজুড়ে।
আয়োজকদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এই দিনে শেখ হাসিনার পতনের সময় তিনি ‘হেলিকপ্টারে পালিয়ে যান’।
সেই মুহূর্তকে স্মরণ করতে উড়ানো হয় হেলিকপ্টার-আকৃতির বেলুন – যা হয়ে ওঠে তার শাসনের একটি প্রতীকী সমাপ্তি দৃশ্য। কিন্তু প্রতীক উল্টো দিকেই কাজ করে।
বেলুন বিস্ফোরণ, একটি প্রতীকী বস্তুর ধ্বংস, এক ধরনের রাজনৈতিক পূর্বাভাস হয়ে ওঠে—এটি কি কেবল অনুষ্ঠানিক অদক্ষতার ফল, নাকি প্রতীকবাদ নিজেই তা সহ্য করতে পারেনি?
বেলুনটি প্রতীক ছিল যদি পলায়নের, তবে তার বিস্ফোরণ কি নতুন বিপদের ইঙ্গিত? নাকি এটি নতুন সময়ের অনিশ্চয়তার প্রতিচ্ছবি?
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ একটি বিকল্প রাজনৈতিক ইতিহাস রচনার চেষ্টা—যেখানে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ঘটে যাওয়া একটি অনির্বাচিত ক্ষমতা হস্তান্তরকে বিপ্লব বা পলায়ন হিসেবে চিত্রিত করা হচ্ছে।
এই দিনটি মূলধারার রাজনীতিতে স্থান না পেলেও বিরোধী বুদ্ধিজীবী ও গণসংগঠনগুলো এটিকে প্রতীকী হিসাবে উজ্জাপন করছে।
এই প্রসঙ্গে, গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণ বিকল্প ইতিহাসেরও এক প্রতীকী বিপর্যয় হয়ে উঠেছে।

 
                         
         
         
        